ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

লন্ডনের বিবৃতি নিয়ে উদ্বেগ, আছে স্বস্তিও

* একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ করেছে: জামায়াত * ‘জুলাই সনদ’ কার্যকরের আগে নির্বাচনের তারিখ জনগণ মানবে না: এনসিপি * আলোচনাকে স্বাগত জানালেও যৌথ বিবৃতি নিয়ে উদ্বেগ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের * নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্তে স্বস্তির বার্তা দেখছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট
লন্ডনের বিবৃতি নিয়ে উদ্বেগ, আছে স্বস্তিও

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডন বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে রয়েছে নানা উদ্বেগ, আছে স্বস্তিও। লন্ডন বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি মনে করে, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ সংবাদ সম্মেলন ও বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ প্রেস ব্রিফিং নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়; যৌথ বিবৃতি দেওয়া দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয়। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তাঁর নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ণ করেছে। গতকাল শনিবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে এমন অভিমত ব্যক্ত করা হয় বলে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। দলের আমির শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর দুপুরে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দলের এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জামায়াত ইসলামী বলেছে, লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে তারা ‘খুবই স্বাভাবিক’ মনে করে। কারণ ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক এবং যৌথভাবে বৈঠক করেছেন।

জামায়াত বলেছে, ‘প্রধান উপদেষ্টা গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণা করেন। তাঁর এই ঘোষণার পর লন্ডন সফরকালে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ সংবাদ সম্মেলন এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি দেওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে আমরা মনে করি। এর মাধ্যমে তিনি একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তাঁর নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে। আমরা মনে করি, দেশে ফিরে এসে প্রধান উপদেষ্টার অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে তাঁর অভিমত প্রকাশ করাই সমীচীন ছিল।’ জামায়াতের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী মনে করে, সরকারপ্রধান হিসেবে কোনো একটি দলের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়। প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলন করায় আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়ে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে বিদ্যমান, সেখানে শুধু কোনো একটি দলের সঙ্গে আলাপ করে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক বলে বিবেচিত হতে পারে না। আমরা আশা করি, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরি করবেন এবং বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করবেন।

সরকারের নিরপেক্ষতা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে, তা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা জাতির সামনে স্পষ্ট করার জন্য জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ‘জুলাই সনদ’ রচনা ও কার্যকর করার পূর্বে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলেও মনে করেন দলটির নেতারা। গত শুক্রবার রাতে এনসিপি’র পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি বলে আমরা মনে করি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি। উপরন্তু, নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে। দলটির নেতারা বলেন, আমরা মনে করি, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রণয়ন, ‘জুলাই সনদ’ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ব্যতীত জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণঅভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জনআকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে। জনগণের দাবি তথা ‘জুলাই সনদ’ রচনা ও কার্যকর করার পূর্বে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে, তা জনগণ মেনে নেবে না। কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাই।

যদিও লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠককে ইতিবাচকভাবে দেখছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। তবে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের যৌথ বিবৃতি প্রকাশের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দলটি। গতকাল শনিবার খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ এবং মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ এক যৌথ বিবৃতিতে লন্ডনে তারেক রহমান ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন। তারা বলেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসন এবং একটি গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে গঠনমূলক সংলাপ ও আলোচনাকে খেলাফত মজলিস সবসময়ই স্বাগত জানায়। এ প্রেক্ষিতে ১৩ জুন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যকার আলোচনা নীতিগতভাবে সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এর আগে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি ঘোষণা করায় খেলাফত মজলিস তা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছিল। তবে দলটির পক্ষ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন আয়োজনের বাস্তবতাও তুলে ধরা হয়, যদি প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচারিক অগ্রগতি নিশ্চিত করা যায়। লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তারেক রহমানের পক্ষ থেকেও অনুরূপ প্রস্তাব এবং প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শর্তসাপেক্ষে ফেব্রুয়ারির সম্ভাবনা উন্মুক্ত রাখার ইঙ্গিত ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে এক্ষেত্রে নেতারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দায়িত্ব ছিল সব রাজনৈতিক দলের প্রতি সমান আচরণ নিশ্চিত করা। কিন্তু কোনো একক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করায় তার নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এবং এটি রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের বার্তা বহন করে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সব রাজনৈতিক দলের আস্থা অর্জন ও জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধান উপদেষ্টার আরও ভারসাম্যপূর্ণ, সতর্ক এবং বিচক্ষণ ভূমিকাই জাতি প্রত্যাশা করে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আশা প্রকাশ করে, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব ভবিষ্যতে সব পক্ষকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করবে।

অপরদিকে, লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের মধ্য দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা কেটে গেছে বলে মনে করেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের শীর্ষ নেতারা। তারা বলেন, আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে যে ফলপ্রসূ ঐকমত্য হয়েছে- তা অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দেশের মানুষের জন্য এনেছে স্বস্তির বার্তা, আশার আলো। গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জোট নেতারা এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে সমমনা জোটের শীর্ষ নেতারা বলেন, ‘দেশবাসীর প্রত্যাশা, ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত এই ফলপ্রসূ বৈঠকের মধ্য দিয়ে এখন সংস্কার এবং বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে, দেশের গণতন্ত্রে উত্তরণের পথও আরও সহজতর হবে। সেদিক থেকে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে দুই নেতার শীর্ষ পর্যায়ের এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’ তারা বলেন, ‘বৈঠকে নির্বাচনের সময় এগিয়ে নিয়ে আসা এবং বিচার ও সংস্কার কাজে দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করার যে আলোচনা হয়েছে, সেটাকে আমরা ইতিবাচক বলে মনে করি।’ জোটের শীর্ষ নেতারা আরও বলেন, ‘এই বৈঠকে একটা বোঝাপড়ার জায়গা তৈরি হলো। এ ছাড়া পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দল ও জনগণের যে প্রত্যাশা ছিল, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে সেই প্রত্যাশাও অনেকখানি অর্জন হয়েছে বলে দেশবাসী মনে করে।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন- জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের আহ্বায়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিম খান, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এসএম শাহাদাত পিপলস লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গরীবে নেওয়াজ এবং বাংলাদেশ ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারেক।

এদিকে, দেশ ও জাতির জনআকাঙ্খা হলো জুলাই সনদ ঘোষণা, সংস্কার, বিচার, স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বলে মনে করছে জাতীয় সংস্কার জোট। গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা ৬টি বিষয়কে প্রাধাণ্য দিচ্ছি। সেগুলো হল-১। ৩১ জুলাই,২০২৫ এর মধ্যে জুলাই সনদ অবশ্যই ঘোষণা করা। ২। পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা,যেন-তেন সংস্কার নয়। সংবিধানসহ সকল সংস্কার ভোট দিয়ে পাস করা। যাতে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার তা পরিবর্তন করতে না পারে অথবা গণপরিষদ নির্বাচন করে সংশোধিত সংবিধান পাস করা। আর প্রয়োজনীয় সংস্কার পরবর্তীতেও চলমান থাকতে হবে। ৩। বিচারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা। ৪। সংস্কার সম্পন্ন করে আগে নির্দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা। এরং ভবিষ্যতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সব সময়ই নির্দলীয়ভাবে করা। এক্ষেত্রে আমরা মনে করি ডিসেম্বরে নির্বাচন ইউক তবে সেটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। আর সংস্কার ও বিচার সম্পন্ন করে জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে হতে পারে। ৫। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া খুবই সহজিকরণ করা। সকল নিয়মণ্ডকানুন বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় অফিস, গঠনতন্ত্রের ভিতিত্তে তালিকাভুক্ত করা বা নিবন্ধন দেয়া এরং নির্বাচন করার জন্য প্রতিক দেয়া। এবং ৬। স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য আগের সকল নিয়ম বাদ দিয়ে সকলের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পথ উন্মুক্ত করা। ১ শতাংশ ভোটারের বিধানসহ সকল বাধা দূর করতে হবে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করে জাতীয় সংস্কার জোটের সদস্য সচিব-১ মো. আব্দুর রহিম, সদস্য সচিব-২ প্রফেসর এ আর খান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশবাসী, রাজনৈতিক দল, সরকার, নাগরিক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন ছাত্র-জনতা সকলকেই জনআকাঙ্খার এ দাবীগুলো বাস্তবায়নে আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। জাতীয় সংস্কার জোটের অন্তর্ভুক্ত ২টি জোট ও ২৮টি রাজনৈতিক দল/সংগঠনগুলো হলো- ১। গণমুক্তি জোট ২। বাংলাদেশ স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদ (জোট) ৩। বাংলাদেশ সংস্কার পার্টি। ৪। ফেডারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। ৫। জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি। ৬। বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি। ৭। বাংলাদেশ নতুন ধারা জনতার পার্টি। ৮। ইসলামী সাম্যবাদী দল ৯। গ্রীনপার্টি বাংলাদেশ। ১০। জাতীয় পল্লী পার্টি। ১১। বাংলাদেশ জাতীয় লীগ। ১২। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। ১৩। বাংলাদেশ লিবারেল গ্রীন পার্টি। ১৪। বাংলাদেশ স্বাধীনতা পার্টি। ১৫। বাংলাদেশ পিপলস পার্টি। ১৬। স্বতন্ত্র ঐক্য প্রক্রিয়া। ১৭। জাতীয় অধিকার মঞ্চ ১৮। প্রগ্রেসিভ পিপলস পার্টি। ১৯। গণ কংগ্রেস। ২০। বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি। ২১। বাংলাদেশ পিপলস পাওয়ার পার্টি। ২২। বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পার্টি। ২৩। নতুন বাংলাদেশ পার্টি। ২৪। জাতীয় প্রগতিশীল কাউন্সিল। ২৫। বাংলাদেশ শ্রমজীবী পার্টি - বিএসপি। ২৬। বাংলাদেশ মাতৃভূমি দল। ২৭। বাংলাদেশ গ্রামীণ পার্টি। ২৮। হৃদম কালচারাল সোসাইটি। ২৯। ন্যাপ ভাসানী। ৩০। সাবাস বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত