
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও তার মাকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। শিক্ষার্থীরা গতকাল সোমবার দুপুর ১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলমান ছিল। সোমবার মধ্যরাতে কুমিল্লা নগরী ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়াজুরী এলাকার ‘নেলি লজ’ নামের একটি তিনতলা ভবনের দোতলার বাসা থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন এবং তার মা তাহমিনা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, তাদের শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে, আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের দাবি জানান। নাহলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন তারা। এ সময় জেলা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ শিক্ষার্থীদের জানান, তারা বেশ কয়েকটি সূত্র ধরে কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। পিবিআই, গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাবও তদন্ত শুরু করছে। একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি ঘটনা তদন্তে শিক্ষার্থীদের কাছে ৪৮ ঘণ্টা সময় চান। বিক্ষোভে আসা নিহত সুমাইয়া আফরিনের সহপাঠী সামিয়ুন সুলতানা ঐশী বলেন, “এই অকাল মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।” আরেক সহপাঠী নূরানী শেখ বলেন, “আমরা হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করছি। এ ছাড়া আমাদের আর কোনো দাবি নেই। যতক্ষণ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হবে আমরা ততক্ষণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।” এর আগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. হায়দার আলী, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাসুদা কামাল, প্রক্টর আব্দুল হাকিমসহ প্রশাসন ও শিক্ষকদের একটি দল সুমাইয়া আফরিনের বাসায় যান। পরে তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। উপাচার্য অধ্যাপক হায়দার আলী বলেন, “অকালে একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু খুবই মর্মান্তিক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটুক সেটি আমরা চাই।” প্রক্টর আব্দুল হাকিম বলেন, “আমরা পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটি তদারকি করা হবে।” কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি মাহিনুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাদেরকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। সুমাইয়া ও তার মায়ের মরদেহ আলাদা কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শরীরে আঁচড় ও রক্তের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।”