ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

২৮ পদের ২৩টিতে জয়ী শিবির

* ছাত্রশিবির প্যানেলের বাইরে পাঁচ পদে জয়ী যারা * যে মতেরই হোক না, সবাই একসঙ্গে কাজ করব : সাদিক কায়েম * তিন ভিপি প্রার্থী পেয়েছেন একটি করে, ২৩ জনের ভোট ১০টির কম * আমরা কোথাও মিছিল করব না, সেজদায় শুকরিয়া আদায় করব, বললেন শিবির সভাপতি * নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবি বাগছাসের * পরাজিত হলেও নির্বাচনি ইশতেহার পূরণের অঙ্গীকার আবিদের
২৮ পদের ২৩টিতে জয়ী শিবির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদসহ ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টি পদেই জয়ী হয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা। বাকি পদগুলোতে স্বতন্ত্র ও বামপন্থি ছাত্র সংগঠনের প্যানেল থেকে জয়ী হয়েছেন। তবে একটি পদেও জিততে পারেননি ছাত্রদলসহ বাকি প্যানেলের প্রার্থীরা। ভিপি, জিএস এবং এজিএস বাদে ডাকসুর ১২টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৯টিতে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। বাকি তিনটি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহ-সাধারণ সম্পাদক পদসহ (এজিএস) ডাকসুতে পদ আছে ২৮টি। এর মধ্যে সদস্যপদ ১৩টি।

যেসব পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী: ভিপি পদে বিজয়ী হয়েছেন আবু সাদিক কায়েম, জিএস পদে এস এম ফরহাদ এবং এজিএস পদে মুহা. মহিউদ্দীন খান। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ফাতেমা তাসনিম জুমা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ইকবাল হায়দার, কমন রুম রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে ছালমা, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে জসীমউদ্দিন খান, ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরমান হোসেন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে আসিফ আব্দুল্লাহ, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে মাজহারুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এম এম আল মিনহাজ এবং মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে মো. জাকারিয়া জয়ী হয়েছেন।

যেসব পদে স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী: সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে সানজিদা আহমেদ তন্বি এবং সমাজসেবা সম্পাদক-যুবাইর বিন নেছারী জয়ী হয়েছেন।

সদস্য পদে ১৩টির মধ্যে ১১টিতে জয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের সদস্যরা। একটিতে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। অন্যটিতে জয়ী বামণ্ডসমর্থিত প্রার্থী।

ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে জয়ী হলেন- সাবিকুন নাহার তামান্না, সর্ব মিত্র চাকমা, আফসানা আক্তার, রায়হান উদ্দীন, তাজিনুর রহমান, ইমরান হোসাইন, মিফতাহুল হোসাইন আল-মারুফ, মো. রাইসুল ইসলাম, শাহীনুর রহমান, আনাস ইবনে মুনির এবং মো. বেলাল হোসেন অপু। এছাড়া সাত বাম ছাত্র সংগঠনের প্যানেল ?প্রতিরোধ পর্ষদ থেকে জয়ী হয়েছেন হেমা চাকমা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়া।

ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির প্যানেলের বাইরে ৫ পদে জয়ী যারা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতে জয় পেয়েছেন। বাকি পাঁচ পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. জসীম উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন। শিবির সমর্থিত প্যানেলের বাইরে পাঁচ পদে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন- সমাজসেবা সম্পাদক: যুবাইর বিন নেছারী (ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ৬০৮)। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক: মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ (ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ৭৮২)। গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক : জুলাই আন্দোলনের ‘পোস্টার গার্ল’ হিসেবে পরিচিত সানজিদা আহমেদ তন্বি ভোট পেয়েছেন ১১ হাজার ৭০৮)। সদস্য পদে : হেমা চাকমা ও উম্মু উসউয়াতুন রাফিয়া।

যে মতেরই হোক না, সবাই একসঙ্গে কাজ করব -সাদিক কায়েম : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে জয়ী হয়েছেন সাদিক কায়েম। জয়ের এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, যে মতের হোক না কেন, সবাই একসঙ্গে কাজ করবেন। তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা আমাদের প্রত্যাশা। আমরা ক্যাম্পাসকে স্বপ্নের ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তুলব।’ জুলাই বিপ্লব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগামী বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখবেন বলেও জানান তিনি।

দায়িত্বপালনকালে মারা যাওয়া সাংবাদিক ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান সাদিক কায়েম। তিনি সব গণমাধ্যমকর্মীদেরও ধন্যবাদ জানান। গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়া জানান ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের নির্বাচিত ভিপি সাদিক কায়েম ও জিএস পদে জয়ী এস এম ফরহাদ।

তিন ভিপি প্রার্থী পেয়েছেন একটি করে, ২৩ জনের ভোট ১০টির কম : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বী তিনজন প্রার্থী মাত্র একটি করে ভোট পেয়েছেন। ৪৫ জন ভিপি প্রার্থীর মধ্যে ২২ জনের মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১০-এর নিচে।

২০২৫ সালের ডাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে। ভিপি প্রার্থীদের মধ্যে একটি করে ভোট পেয়েছেন মো. সুজন হোসেন, রাকিবুল হাসান ও রাসেল হক। মাত্র দুটি করে ভোট পেয়েছেন মো. নাসিম উদ্দিন, মো. সোহানুর রহমান ও মো. হাবিবুল্লাহ। তিনটি করে ভোট পেয়েছেন মো. মুদাব্বীর রহমান, মো. হেলালুর রহমান ও শাহ জামাল সায়েম।

মো. ফয়সাল আহমেদ পেয়েছেন চারটি ভোট। পাঁচটি করে ভোট পেয়েছেন আসিফ আনোয়ার অন্তিক ও মো. আতাউর রহমান শিপন। পাঁচজন প্রার্থী পেয়েছেন ছয়টি করে ভোট। তারা হলেন দ্বীন মোহাম্মদ সোহাগ, মো. আজগর ব্যাপারী, মো. শাফি রহমান, মো. উজ্জ্বল হোসেন ও মোসা. জান্নাতী বুলবুল। তিনজন প্রার্থী পেয়েছেন সাতটি করে ভোট—মো. আবুল হোসাইন, মো. রাসেল মাহমুদ ও যায়েদ বিন ইকবাল। দুটি প্রার্থী পেয়েছেন আটটি করে ভোট—জালাল আহমদ ও রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। মাহদী হাসান পেয়েছেন নয়টি ভোট।

সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন সাদিক কায়েম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট।

আমরা কোথাও মিছিল করব না, সেজদায় শুকরিয়া আদায় করব -শিবির সভাপতি : ডাকসু নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাই বিজয়ী হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। গতকাল বুধবার সকালে সিনেট ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা জানান। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ মহান। অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাই বিজয়ী হলো। আমরা সারাদেশের কোথাও কোনো মিছিল করব না। শুধু মহান রবের কাছে সেজদার মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করব। এই বিজয় আল্লাহর একান্ত দান। আমরা অহংকারী হবো না, সবার প্রতি উদার ও বিনয়ী থাকব। স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়ার পথযাত্রী, আমরা থামব না। প্রিয় মাতৃভূমি হবে সবার বাংলাদেশ।’

ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবি বাগছাসের : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন একাধিক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ করে তদন্ত ও জড়িতদের বিচার দাবি করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস)। গতকাল বুধবার সংগঠনটির সদস্যসচিব জাহিদ আহসান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়। এতে বলা হয়, নির্বাচনে একাধিক ব্যালট পেপার আগেই পূরণ অবস্থায় পাওয়া যায়। রোকেয়া হলে একটি নির্দিষ্ট সময় ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল এবং সার্বক্ষণিক চালু থাকার কথা থাকলেও ভোট গণনার এলইডি স্ক্রিন একাধিকবার বন্ধ হয়ে যায়। এসব ঘটনায় নির্বাচনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। সংগঠনটি বলছে, এ ধরনের অনিয়মের জন্য প্রশাসন ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা দায়ী। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই এসব ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের মতামত প্রকাশ করেছে, আমরা সেই রায়কে আন্তরিকভাবে সাধুবাদ জানাই। গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সবসময় সচেষ্ট থাকবে।

এছাড়াও স্থিতিশীল পরিবেশের মধ্য দিয়ে ডাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করায় ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় সংগঠনটি। ডাকসু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা সামনের বছরগুলোতেও বজায় থাকবে বলে আশা রাখেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

পরাজিত হলেও নির্বাচনি ইশতেহার পূরণের অঙ্গীকার আবিদের : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে পরাজিত হলেও নিজেদের দেওয়া নির্বাচনি ইশতেহার পূরণের অঙ্গীকার করেছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান। গতকাল বুধবার ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে আবিদ এ অঙ্গীকার করেন। এ ছাত্রনেতা জানান, তিনি তার ক্ষুদ্র জীবনে যে এতদূর আসবেন তা কোনোদিন ভাবেননি। নির্বাচনের আগের রাতে সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দিনের অনুষ্ঠানে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- ৫ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান? তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি আসলে কোনোদিনই জানতেন না নিজেকে কোথায় দেখতে হবে, কোথায় দেখা উচিত। একের পর এক আন্দোলন-সংগ্রাম এসেছে, নিজেকে রাজপথে সঁপে দিয়েছেন। সেই পথ আজ তাকে এতদূর নিয়ে এসেছে।

ভোটের দিনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে আবিদ বলেন, ‘এ নির্বাচনে আমার দিনটা শুরু হয় মিডিয়ার অপপ্রচার দিয়ে। দুপুর থেকেই আমি ভোটে বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক সমস্যা খুঁজে পেয়েছি, সারাটা দিন সেসব নিয়ে কথা বলেছি। এসব অভিযোগের একটি সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে আসবে বলে এখনো আশা রাখি।’

নিজের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করে ছাত্রদলের এ নেতা বলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমরা কেউ পরিপূর্ণ না। আমি জানি, আমি আপনাদের জন্য যথেষ্ট কাজ করতে পারিনি। সত্যি বলতে জীবন আমাকে সেই সুযোগটুকুও দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী ভাই-বোনকে ভোট দিতে আসার জন্য আমি মন থেকে ধন্যবাদ জানাই। মাত্র ২০ দিনের ক্যাম্পেইনে আমি চেষ্টা করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ছাত্রের কাছে ছুটে যেতে। অনেকটুকু কাছাকাছি গিয়েছি; কিন্তু সবাইকে হয়তো স্পর্শ করতে পারিনি।’ নির্বাচনে পরাজিত হলেও সহপাঠীদের আশ্বস্ত করে আবিদ বলেন, ‘আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়, আমার যাত্রা আরও অনেক দীর্ঘ। আমি এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন ছাত্রনেতা। কথা দিচ্ছি, আমার নির্বাচনি ইশতেহারে যা কিছু ছিল, তা একজন ছাত্রনেতা হিসেবেই প্রশাসনের কাছ থেকে আদায় করে নিতে যা যা করা দরকার তা আমি করবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির নতুন শুরুটা আমাদের হাত ধরেই হবে। আমরা অতন্দ্র প্রহরী হয়ে রাজপথ পাহারা দেব, নিজেদের সবটুকু দিয়ে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসব। ইনশা-আল্লাহ, এর প্রতিফলন আপনারা পরবর্তী ডাকসুতে দেখতে পাবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কখনো ছেড়ে যাবেন না উল্লেখ করে আবিদ তার পোস্ট শেষ করেন মার্কিন অধিকারকর্মী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের এক বাণী দিয়ে। তা হলো- ‘আমাদের অবশ্যই সীমিত হতাশাকে মেনে নিতে হবে, কিন্তু কখনই অসীম আশা হারানো যাবে না।’

রাজনৈতিক জীবনে এটাই প্রথম পরাজয় -হামিম : ছাত্রদল মনোনীত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম বলেছেন, ব?্যক্তিগত জীবনে অনেক হেরেছি, রাজনৈতিক জীবনে এটাই প্রথম পরাজয়। গতকাল বুধবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি লেখেন, ‘আমি সাধারণ একজন মানুষ। হাসি-খুশি তবে সংগ্রামী। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ছাত্রদল থেকে জিএস প্রার্থী করে তারেক রহমান ও ছাত্রদলের নেতারা আমাকে সম্মানিত করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাকে যেভাবে প্রকাশ?্যে গ্রহণ করেছিলেন, আমার ওপর আস্থা রেখেছেন সেটির ফলাফলে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি তারেক রহমান ও ঢাবি শিক্ষার্থীদের কাছে।’

ব্যক্তিগত জীবনে অনেক হেরেছি, রাজনৈতিক জীবনে এটাই প্রথম পরাজয়। যদিও এ পরাজয় ভাগে?্যর কাছে- পরিবেশ ও পরিস্থিতির কাছে এবং নিছক সময়ের কাছে। সারাদেশের মানুষের কত দোয়া। নিশ্চয়ই সে দোয়া ব্যর্থ হবে না।

নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার মনের খবর জানতেন, এতটা সহীহ চিন্তাভাবনা থাকার পরও কেন তাকদিরে এই পরাজয় রেখেছিলেন জানি না। আমি চিরকৃতজ্ঞ এ দলের প্রতিটা নেতাকর্মীর কাছে, আমার বিশ্ববিদ্যালয় আদর্শিক অগ্রজদের কাছে আমার জন?্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন, বিশেষ করে তারেক রহমানের কাছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেইসব শিক্ষার্থীর কাছে, যারা আমার জয় নিশ্চিত ভেবেছিলেন এবং বিশেষ করে সেসব শিক্ষার্থীর কাছে, যারা মনে করেননি- আমি তাদের জন্য যোগ্য!

ডাকসু নির্বাচন

যেসব সম্পাদকীয় পদে ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা জয়ী

সহ সভাপতি (ভিপি) - আবু সাদিক কায়েম

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) - এস এম ফরহাদ

সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) - মুহা মহিউদ্দীন খান

মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক - ফাতেমা তাসনিম জুমা

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক - ইকবাল হায়দার

কমন রুম রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক - উম্মে ছালমা

আন্তর্জাতিক সম্পাদক - জসীমউদ্দিন খান

ক্রীড়া সম্পাদক - আরমান হোসেন

ছাত্র পরিবহন সম্পাদক - আসিফ আব্দুল্লাহ

ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক - মাজহারুল ইসলাম

স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক - এম এম আল মিনহাজ

মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক - মো. জাকারিয়া

যেসব সম্পাদকীয় পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী

সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক - মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ

গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক - সানজিদা আহমেদ তন্বি

সমাজসেবা সম্পাদক - যুবাইর বিন নেছারী

সদস্য পদে ছাত্রশিবিরের যেসব প্রার্থী জয়ী

সাবিকুন নাহার তামান্না - প্রাপ্ত ভোট : ১০০৮৪

সর্ব মিত্র চাকমা - প্রাপ্ত ভোট : ৮৯৮৮

আফসানা আক্তার - প্রাপ্ত ভোট : ৫৭৪৭

রায়হান উদ্দীন - প্রাপ্ত ভোট : ৫০৮২

তাজিনুর রহমান - প্রাপ্ত ভোট : ৫৬৯০

ইমরান হোসাইন - প্রাপ্ত ভোট : ৬২৫৬

মিফতাহুল হোসাইন আল-মারুফ - প্রাপ্ত ভোট : ৫০১৫

মো. রাইসুল ইসলাম - প্রাপ্ত ভোট : ৪৫৩৫

শাহীনুর রহমান - প্রাপ্ত ভোট : ৪৩৯০

আনাস ইবনে মুনির - প্রাপ্ত ভোট : ৫০১৫

মো. বেলাল হোসেন অপু - প্রাপ্ত ভোট : ৪৮৬৫

বামপন্থী প্যানেল থেকে জয়ী

হেমা চাকমা - প্রাপ্ত ভোট : ৪৯০৮

স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী

উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়া - প্রাপ্ত ভোট : ৪২০৯

ভিপি প্রার্থীরা কে কত ভোট পেলেন

সাদিক কায়েম

প্রাপ্ত ভোট : ১৪০৪২

ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল

উমামা ফাতেমা

প্রাপ্ত ভোট : ৩৩৮৯

স্বতন্ত্র

আবিদুল ইসলাম খান

প্রাপ্ত ভোট : ৫৭০৮

ছাত্রদল

আবদুল কাদের

প্রাপ্ত ভোট: ১১০৩

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ

শামীম হোসেন

প্রাপ্ত ভোট : ৩৮৮৩

স্বতন্ত্র

তাসনিম আফরোজ ইমি

প্রাপ্ত ভোট : ৬৮

বামপন্থী প্রতিরোধ পর্ষদ

জিএস প্রার্থীরা কে কত ভোট পেলেন

এস এম ফরহাদ

প্রাপ্ত ভোট : ১০৭৯৪

ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল

তানভীর বারী হামিম

প্রাপ্ত ভোট : ৫২৮৩

ছাত্রদল

মেঘমল্লার বসু

প্রাপ্ত ভোট : ৪৯৪৯

বামপন্থী প্রতিরোধ পর্ষদ

আরাফাত চৌধুরী

প্রাপ্ত ভোট : ৪০৪৪

স্বতন্ত্র

আবু বাকের মজুমদার

প্রাপ্ত ভোট : ২১৩১

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ

এজিএস প্রার্থীরা কে কত ভোট পেলেন

মুহা. মহিউদ্দীন খান

প্রাপ্ত ভোট : ১১৭৭২

ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল

তানভীর হাদী মায়েদ

প্রাপ্ত ভোট : ৫০৬৪

ছাত্রদল

তাহমীদ আল মুদ্দাসসীর

প্রাপ্ত ভোট : ৩০০৮

স্বতন্ত্র

জাবির আহমেদ জুবেল

প্রাপ্ত ভোট: ১৫১১

বামপন্থী প্রতিরোধ পর্ষদ

মহিউদ্দিন রনি

প্রাপ্ত ভোট: ১১৩৭

স্বতন্ত্র

আশরেফা খাতুন

প্রাপ্ত ভোট: ৯০০

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত