
আগামী জাতীয় নির্বাচন যে ভালো হবে ডাকসু নির্বাচনে তার প্রতিফলন দেখা গেছে বলে দাবি করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেছেন, ‘এ সময়সূচি থেকে কেউ সরে আসতে চাইলে তা জাতির জন্য মহাবিপর্যয় ডেকে আনবে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশন আয়োজিত ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেছেন। আগামী নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে— এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রেস সচিব বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন ভালো হবে, তার একটা প্রতিফলন দেখা গেছে ডাকসুতে। সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো পক্ষপাতিত্ব করবে না- জানিয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। নির্বাচনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রায় ৮ লাখ পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।
শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, সুষ্ঠু নির্বাচন শুধু সরকারের ইচ্ছায় নয়, সমাজের বিভিন্ন অংশ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার ওপরও নির্ভর করে। ‘ইলেকশন করে সোসাইটি, পলিটিক্যাল পার্টিগুলোতারা যদি চায়, তাহলে একটি ভালো নির্বাচন অবশ্যই সম্ভব, যোগ করেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, জনগণ যদি বন্যার জলের মতো ভোট দিতে কেন্দ্রে ছুটে আসেন, তাহলে কোনো শক্তিই সুষ্ঠু নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। ডাকসুতে যেমন হয়েছে, ঠিক তেমনি সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে জাতীয় নির্বাচনও সম্ভব।’ তিনি বলেন, সবাই নিজ নিজ অবস্থানে সৎ থেকে দায়িত্ব পালন করলে আগামী নির্বাচন হবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।
শফিকুল আলম বলেন, সংস্কার কমিশনের ৫১টি সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়েছে। সামনে আরও কাজ হবে। এই সরকার যাওয়ার আগে বেশির ভাগ সংস্কার করে যাবে। শফিকুল আলম বলেন, সভায় জানানো হয়, বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের করা সুপারিশের মধ্যে ৫১টি সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়েছে, বাকিগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে। তিনি বলেন, এছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে শ্রম উপদেষ্টা জানিয়েছেন—৮২টি শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ আইন সংশোধন করলে বেশির ভাগ সুপারিশ এমনিতেই বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। আইন সংশোধনের কাজ শ্রম মন্ত্রণালয় করছে। শ্রম মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নিজ থেকে অনেক সংস্কার কাজ করেছে। কিছু সংস্কার রাজনৈতিক সম্পর্কিত, সেগুলো আমাদের রাজনৈতিক সরকারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
স্থানীয় সরকার সংস্কার নিয়ে অনেক আলাপ হয়েছে উপদেষ্টা পরিষদে বৈঠকে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, স্থানীয় সরকার কীভাবে বিকেন্দ্রীকরণ করা যায়, তার ওপর প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন। স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে নিজেদের ফান্ড নিজেরাই জোগাড় করতে পারে সেটার সম্ভাবনা নিয়েও আলাপ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ সংস্কারের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশের ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেশন সার্ভিস’ করার জন্য। পুলিশ যে তদন্ত করে সেটা যাতে স্বাধীনভাবে করা যায়, এখানে রাজনৈতিক বা অন্য কোনও প্রভাব বিস্তার যাতে না হয়। এ জন্য খুব দ্রুত একটা আইন করা হবে। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে একটা ইন্টারনাল কমপ্লেইন কমিশন তৈরি করার কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৫১টি সংস্কার বাস্তবায়ন হয়েছে। ২৪৬টি বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। উপদেষ্টারা নিজেরা অনেক রকম কাজ করছেন। এনবিআর ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন জায়গায় কাজ হয়েছে।