ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

হাসিনা-আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন

হাসিনা-আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় শেখ হাসিনা যেহেতু সব অপরাধীর ‘প্রাণভোমরা’ ছিলেন, তাই তাকে আইনানুযায়ী চরম দণ্ড (মৃত্যুদণ্ড) দেওয়া শ্রেয় বলে মনে করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ সংক্রান্ত মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিন জনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শেষ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। টানা পাঁচদিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের চরম দণ্ড (মৃত্যুদণ্ড) চেয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই আবেদন জানান তিনি। একইসঙ্গে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের শাস্তির বিষয় আদালতের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।

এদিন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিকালে তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৪০০ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। একজন মানুষকে হত্যার জন্য যদি একবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে ১৪০০ মানুষকে হত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে ১৪০০ বার ফাঁসি দিতে হবে। কিন্তু আইনে এটা সম্ভব নয়। এ জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আমরা তার চরম দণ্ড দেওয়ার জন্য আবেদন করছি। যদি তাকে এ দণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে ন্যায়বিচার পাবে দেশের জনগণ।

এর আগে গত ১২ অক্টোবর এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক শুরু করে। ওই দিন আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলের ইতিহাস তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর। একইসঙ্গে গুম-খুনের বর্ণনা দেন তিনি। এরপর গত ১৩ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। ওই দিন বেশ কয়েকটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়—যা এ মামলার বিচারকাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন। পরে গত ১৪ অক্টোবর তৃতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্কে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বিভিন্ন তথ্যচিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি শেখ হাসিনার সঙ্গে হাসানুল হক ইনু, শেখ ফজলে নূর তাপসের কথোপকথনসহ কয়েকটি ফোনালাপ বাজিয়ে শোনানো হয়। একইসঙ্গে এ মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া বিভিন্ন সাক্ষীর বর্ণনা উপস্থাপন করা হয়। এরপর গত ১৪ অক্টোবর মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে প্রসিকিউশন। এর আগে গত ৮ অক্টোবর এ মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ?্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়। এ মামলায় গত ৮ অক্টোবর সাক্ষ্য দেওয়া মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে তৃতীয় ও শেষ দিনের মতো জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। জুলাই গণহত্যা নিয়ে সাক্ষীর দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে নিজের মক্কেলদের পক্ষে বিভিন্ন সাফাই প্রশ্ন করেন এই আইনজীবী।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত