ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা

তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা

মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করার দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক- কর্মচারীরা। গতকাল শুক্রবার বেলা সোয়া দুইটা থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন। এতে অংশ নেন শতাধিক শিক্ষক- কর্মচারী।

শুক্রবার ষষ্ঠ দিন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষক- কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন। রোববার থেকে তিন দফা দাবিতে তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। তবে পুলিশ বাধা দিলে শিক্ষক- কর্মচারীরা সেদিন দুপুর থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এসে অবস্থান নেন। গত মঙ্গলবার সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ ছাড়া গত বুধবার তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার মার্চ টু যমুনা কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও পরে তারা সেই কর্মসূচি স্থগিত করেন।

বৃহস্পতিবার এক আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া মূল বেতনের ৫ শতাংশ (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) দেওয়ার প্রস্তাব দিলে তারা সেটা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

সরকারের অবস্থান জানান শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া তারা দিতে পারবে এবং সেটি ন্যূনতম ২ হাজার টাকা থাকবে। এখন যেখানে টাকা নেই, সেখানে এর থেকে বেশি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এটা শিক্ষক-কর্মচারীদের জানানো হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীরা সেই প্রস্তাবে রাজি নন। তাঁরা বলেছেন, এখন ১০ শতাংশ দিতে হবে, সামনের বছর ১০ শতাংশ দিতে হবে। এদিকে আমরণ অনশন শুরু করা শিক্ষক- কর্মচারীরা জানান, তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মস্থলে ফিরবেন না। তিনটি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

আমরণ কর্মসূচি শুরুর আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই। ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দিতে হবে। শিক্ষকেরা আর কোনো কথা শুনতে চান না। এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’ এই শিক্ষক নেতা জানান, আমরণ অনশনে বসা শিক্ষকদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়বে। ইতিমধ্যে দেশের সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলা কর্মবিরতি অনির্দিষ্টকাল চলবে। রোববার থেকে শিক্ষক–কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরাও নিজ নিজ জায়গা থেকে এই আন্দোলনে যোগ দেবেন।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার পশ্চিম ফুলমতি হাইস্কুলের শিক্ষক আজিজার রহমান। ৫৬ বছর বয়সী এই শিক্ষক শুরু করেছেন আমরণ অনশন। তিনি বলেন, ‘যতক্ষণই লাগুক। অনশন চালিয়ে যাব।’

শরীর খারাপ হলে কী করবেন, জানতে চাইলে এই মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক বলেন, ‘করার কিছু নেই। আমাদের মতো শিক্ষকেরা ভালো নেই। তবু সরকার শিক্ষকদের মূল্যায়ন করে না। তারা কষ্টে থাকলেও দেখার কেউ নেই। আমার অবসরের সময় হয়ে গেছে। তবে আমি চাই, শিক্ষক হয়ে পরিবার চালানোর গ্লানি যাতে পরের প্রজন্মকে টানতে না হয়। শিক্ষকেরা যাতে মাথা উঁচু করে সমাজে বাঁচতে পারেন, তাই অনশনে বসেছি।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত