ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

এজাহার থেকে আসামির নাম বাদ দেওয়া রহস্যজনক

বলল বিএনপির তিন সংগঠন
এজাহার থেকে আসামির নাম বাদ দেওয়া রহস্যজনক

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে লাল চাঁদ নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনা কেন্দ্র করে কিছু রাজনৈতিক দল ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি।

গতকাল শনিবার উত্তরা ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প উদ্বোধনকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সত্য উদঘাটনের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তবে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের যাদের নাম এসেছে, তাদেরকে রাতেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার। কখনও কখনও ছিদ্রপথে দু’একজন দুষ্কৃতিকারী ঢুকে পড়তে পারে।

কিন্তু দল কিংবা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কখনও কার্পণ্য করেন না।’ রিজভী উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘পরশু রাতে পাবনার সুজানগরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। সে রাতেই জড়িতদের বহিষ্কার করা হয়েছে। মিটফোর্ডের ঘটনাটিও রাজনৈতিক নয়, এটি ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক বিরোধ। ভাঙারি ব্যবসা নিয়ে এই সংঘর্ষ হয়েছে। নিহত ব্যক্তি ও ঘাতকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এটি দলের আদর্শ বা পদণ্ডপদবি নিয়ে নয়, শ্রেফ ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধ। মহানগর বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ বিষয়ে কিছু জানতেন না।’ রিজভীর অভিযোগ, ‘দুই-একটি রাজনৈতিক দল এই ঘটনাকে রঙচঙ দিয়ে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা মিছিল করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। অথচ আমরা শেখ হাসিনার মতো নিশ্চুপ থাকিনি। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি, জড়িতদের বহিষ্কার করেছি, ঘটনার নিন্দা জানিয়েছি। তাহলে আপনারা মিছিল করছেন কেন? রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই তো।’

এদিকে গতকাল রাজধানীর নয়া পল্টনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিন সংগঠনের পক্ষে জাতীয়তাবাদী যুব দলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না বলেন, পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনার মূল আসামিদের অদ্যাবধি গ্রেফতার না করা এবং মামলার এজাহার থেকে মূল তিন আসামিকে বাদ দেওয়া ‘রহস্যজনক’ বলে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপির তিন সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুব দল, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় যারা সরাসরি সংশ্লিষ্ট, ভিডিও ফুটেজ ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে যাদের দেখা গেছে, আশ্বর্যজনক তাদেরকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়নি। যারা প্রাণঘাতী আঘাতগুলো করেছে তারা অদ্যাবধি গ্রেফতারও হয়নি। এর কারণ আমাদের বোধগম্য নয়।’

মুন্না বলেন, আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমে আমরাও জানতে চাই, কারা কেন এই তিন আসামিকে বাদ দিয়ে নতুন করে অন্য জনকে আসামি করলো, এটা আমরা জানতে চাই। আর ঘটনাটি বুধবারের (৯ জুলাই)। শুক্রবার (১১ জুলাই) ই ঘটনা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। দুই দিন আগের ঘটনা কেন দুদিন পর প্রচার হলো, এর পেছনে কারা জড়িত সেটাও খুঁজে দেখা উচিত।’ গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে এ প্রশ্নটি রেখে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানায় তিন সংগঠন।

প্রসঙ্গত, পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে বুধবার এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ড এবং তার পরের ঘটনাপ্রবাহের বেশ কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। সেসব দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছে মানুষ, তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত