
খেতে সুস্বাদু হওয়ায় চুয়াডাঙ্গার খেজুর গুড়ের দেশের বিভিন্ন স্থানে চাহিদা হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে এ গুড়ের উৎপাদন বাড়ালে প্রচুর আয় করা সম্ভব। জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় প্রতি বছরের মতো চলতি মৌসুমের শুরুতেই এ জেলার মাঠে মাঠে গাছিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর তিন হাজার টন খেজুর গুড় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে যার বাজার মূল্য ৫০ কোটি টাকার উপরে।
চুয়াডাঙ্গার সুস্বাধু সুগন্ধি খেজুর গুড়ের স্থানীয়ভাবে ‘নলি’ বা নলেন গুড় নামে পরিচিত। নলেন এই খেজুর গুড়ের সর্ববৃহৎ হাট বসে জেলার সরজগঞ্জে। এছাড়াও এ জেলার অন্যান্য সাপ্তাহিক হাট এবং বাজারগুলোতেও খেজুর গুড়ের আমদানি হয়। জেলার সরোজগঞ্জসহ বিভিন্ন হাট থেকে ভরা মৌসুমে প্রতি সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক গুড় সারা দেশ ও দেশের বাইরে রপ্তানি হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার জানান, শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। এই শীতের সঙ্গে সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা জেলায় মানসম্পন্ন খেজুর গুড় উৎপাদনকারী গাছি ভায়েরা গাছের পরিচর্যা শেষে এখন খেজুর গুড় উৎপাদনে নিয়োজিত হয়ে পড়েছেন। তারা ব্যস্তসময় পার করছেন খেজুর গুড় উৎপাদনের জন্য। কখনও রস সংগ্রহ করছেন, রস সংগ্রহের পর তা প্রক্রিয়া করে গুড় তৈরি করছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে গুড় উৎপাদনে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, জেলায় ২ লাখ ৭২ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। চলতি মৌসুমে গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৭০০ টন, যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকার বেশি। চুয়াডাঙ্গা জেলায় গুড়ের বাজার বসে সরজগঞ্জ, বদরগঞ্জ, জয়রামপুর, হিজোলগাড়ী, দিন্নাতপুর, দোস্তের হাট, জীবননগর ও হাসাদ বাজারে। গাছিরা জানান, ক্রমেই খেজুর গাছ যেমন কমছে নতুন করে গাছি পেশায় কেউ আসছে না। তাই আগামীতে বাংলার এ ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে পারে। তবে, বাণিজ্যিকভাবে খেজুর গুড় উৎপাদন প্রচুর আয় করা সম্ভব।