স্বতন্ত্র ইউনানি-আয়ুর্বেদিক কাউন্সিল গঠনের দাবিতে গতকাল টানা ১৭ দিন ধরে চলে সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। আন্দোলনকারীরা ক্লাস ও একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করায় মিরপুর-১৩ নম্বরে অবস্থিত সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসটিতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
দাবি আদায়ের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছে দেশের সব ইউনানি-আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলো। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আলাদা কাউন্সিল ছাড়া এ চিকিৎসা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বারবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ ১৯৯৬ সালের নীতিমালায় স্পষ্টভাবে বিএমডিসি-এর আদলে একটি পৃথক কাউন্সিল গঠনের কথা বলা হয়েছিল। সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানা গেছে।
আন্দোলনকারীদের প্রত্যাশা, অতিসত্বর সংসদে আইন পাশের মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান আসবে। প্রেসক্লাবের সামনে দাবি আদায়ের জন্য জড়ো হন সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজ, রওশন জাহান ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ (লক্ষ্মীপুর), এবং হামদর্দ ইউনানি মেডিকেল কলেজের (বগুড়া) শিক্ষার্থীরা।
এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘১৯৯৬ সালের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিমালায় বলা হয়, অস্থায়ীভাবে রেজিস্ট্রেশন প্রদানের পাশাপাশি একটি স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠন করা হবে। কিন্তু ২৯ বছর পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে চিকিৎসকদের আইনি জটিলতা, উচ্চশিক্ষায় বাধা, নিয়োগ-সংক্রান্ত সমস্যা ও পেশাগত নিরাপত্তার ঘাটতির মতো গুরুতর সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।’ এদিকে, সরকারিভাবে ৩৬তম ব্যাচে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হলেও আন্দোলনের কারণে ১৩ জুলাই পর্যন্ত কেউ ভর্তি হতে পারেনি।
গতকাল ভর্তির শেষ দিনেও আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে হয়ত এবারও কেউ ভর্তি হতে পারবে না। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট করে জানান, যদি নতুন ভর্তি সময়সূচি ঘোষণা করা হয়, তবুও তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান করে তা প্রতিহত করবেন। শিক্ষার্থীরা জানান, স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠন না হওয়া পর্যন্ত তারা কাউকে ভর্তির সুযোগ দিতে প্রস্তুত নন। তাদের দাবি, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিকিৎসক-শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য এই কাউন্সিল জরুরি।
তাই প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।