ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পাথেয়

সৌভাগ্য দুর্ভাগ্য

সৌভাগ্য দুর্ভাগ্য

ইমাম ইবনু কায়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রহ.) বলেন, যখন কোনো বান্দা সকাল-সন্ধ্যা যাপন করে এবং আল্লাহ তায়ালাকে ঘিরেই তার চিন্তাভাবনা আবর্তিত হয়, আল্লাহ তার সব প্রয়োজন ও চাহিদা পূর্ণ করেন, তার দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ দূর করেন, তার অন্তরকে তাঁর ভালোবাসায় আচ্ছন্ন করেন, তার জিহ্বাকে তাঁর জিকিরে মশগুল রাখেন, তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে তাঁর আনুগত্যে ব্যস্ত রাখেন।

আর যখন কোনো বান্দা সকাল-সন্ধ্যা যাপন করে এবং দুনিয়ার বিষয়াদি নিয়েই তার চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খেতে থাকে, তখন আল্লাহ তায়ালা তার দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, অভাব ও দুর্দশা বাড়িয়ে দেন। তার নিজের ওপরই এসব চাপিয়ে দেন। ফলে তার অন্তর আল্লাহর ভালোবাসা থেকে রিক্ত হয়ে পার্থিব জগতের ভালোবাসায় আকুল হয়ে ওঠে। তার জিহ্বা আল্লাহর জিকির না করে পার্থিব সৃষ্টিকুলের আলোচনায় ব্যস্ত থাকে। তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য থেকে মুক্ত হয়ে সৃষ্টিকুলের সেবা ও তাদের কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে। যার কারণে সে অন্য মানুষের কাজকর্মে নিজেকে পশুর মতো নিয়োজিত করে। ফলে তার অবস্থা হয় হাপরের মতো, যার পেট ফুলানো হয় এবং পাঁজরগুলোর নিংড়ানো হয় শুধু অন্যের উপকারের জন্য।

যে-কেউই আল্লাহ তায়ালার ইবাদত ও তাঁর আনুগত্য থেকে উদাসীন হয়, সে অবধারিতভাবে সৃষ্টিকুলের ও অন্য মানুষের উপাসনা ও আনুগত্যে, তাদের প্রেমে, তাদের সেবায় নিয়োজিত হয়।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণে বিমুখ হয়, আমি তার জন্য নিয়োজিত করি এক শয়তান, তারপর সেই হয় তার সহচর।’ [সুরা যুখরুফ : আয়াত ৩৬] [আল-ফাওয়ায়িদ, পৃষ্ঠা ৮৪]।

জীবনের পাথেয়

ইমাম ইবনু কায়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রহ.) এর আলোকিত কথামালা

তুমি আজ নিজেকে (আল্লাহর উদ্দেশে) বিকিয়ে দাও; কারণ, বাজার চালু রয়েছে, যথার্থ মূল্যও (সওয়াব ও প্রতিদান) রয়েছে, পণ্যসামগ্রীও (সৎকর্ম) খুব সস্তা। কিন্তু এই বাজার ও পণ্যসামগ্রীর ক্ষেত্রে এমন একদিন আসবে, যখন কোনো মানুষই তা লাভ করতে পারবে না; অল্প মানুষও না, বেশি মানুষও না। তা হালো হাশরের দিন। (হাশরের দিন পুণ্যকাজ করার ও সওয়াব অর্জনের আর সুযোগ থাকবে না)।

নবী করিম (সা.) এর অনুসরণ ও ইখলাস ব্যতীত কোনো আমল ওই মুসাফিরের মতো, যে তার ঝুলি বালু দ্বারা পূর্ণ করে। ফলে সে বোঝা বহন করে ঠিকই; কিন্তু তা তার কোনো উপকার করে না।

যে ব্যক্তি পবিত্রতার স্বাদ আস্বাদন করতে পেরেছে, তার জন্য ধৈর্যের তিক্ততা সহজ।

লক্ষ্যে পৌঁছানোর তীব্র আকাক্সক্ষা তা অর্জনের প্রচেষ্টাকে আবশ্যক করে তোলে।

যখন বাতিলের অন্ধকার রাতে হিম্মতের নক্ষত্র উদিত হয়, তাকে অনুসরণ করে জেগে ওঠে দৃঢ়প্রত্যয়ের চাঁদ, তখন হৃদয়ের জমিন তার প্রতিপালকের আলোতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। (আল-ফাওয়ায়িদ : পৃষ্ঠা ৪৯-৫১)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত