ঢাকা রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বৈষম্যহীন শ্রমবাজার গড়ে তুলতে জাতীয় কর্মসংস্থান নীতির দাবি

বৈষম্যহীন শ্রমবাজার গড়ে তুলতে জাতীয় কর্মসংস্থান নীতির দাবি

বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন শ্রমবাজার গড়ে তুলতে একটি কার্যকর জাতীয় কর্মসংস্থান নীতির দাবি উঠেছে। রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক জাতীয় সংলাপে বক্তারা বলেন, যেন কেউ প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও মনোভাব থাকা সত্ত্বেও কেবল সামাজিক, জাতিগত, ভৌগোলিক বা শারীরিক সীমাবদ্ধতার কারণে কর্মবাজার থেকে বঞ্চিত না হয়। ‘সবাইকে নিয়ে গড়া কর্মক্ষেত্রই টেকসই উন্নয়নের চাবিকাঠি’ শীর্ষক সংলাপে ইউসেপ বাংলাদেশের শিক্ষার্থী মো. রুবেল ইসলাম বলেন, বাস্তবমুখী দক্ষতার অভাব এবং নিয়োগকারীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের ঘাটতি তরুণদের কর্মজীবন শুরুতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিল্পের মধ্যে কি এমন কোনো যোগাযোগ রয়েছে, যা যুব সমাজকে চাকরির বাজারের চাহিদা সম্পর্কে সময়মতো আপডেট দেবে? চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা থেকে অংশ নেওয়া আদিবাসী তরুণী লিলি প্রু মারমা জানান, প্রশিক্ষণ ও চাকরির সুযোগের সীমাবদ্ধতা, ভাষাগত ও ভৌগোলিক প্রতিবন্ধকতার কারণে তাদের কর্মজীবনে অন্তর্ভুক্তি ব্যাহত হচ্ছে। তিনি ইতিবাচক পদক্ষেপ ও জবাবদিহিতার আহ্বান জানান। এই সংলাপের আয়োজন করেছে আইএলও, বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিজেবিলিটি নেটওয়ার্ক এবং ‘বহ্নিশিখা’। শ্রম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই সংলাপে কর্মক্ষেত্রে বৈচিত্র্য, সহনশীলতা এবং ন্যায্যতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন বলেন, আমরা একত্রিত হয়েছি সেইসব শ্রমিকদের স্বীকৃতি জানাতে, যাদের কণ্ঠস্বর প্রায়শই অশ্রুত থেকে গেছে। বাংলাদেশ যখন নতুন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংলাপে বক্তারা বলেন, শ্রমবাজারে এখনও কাঠামোগত ও অচেতন বৈষম্য রয়েছে। তাই এর সমাধানে কেবল নীতি নয়, প্রয়োজন সংস্কৃতি ও মানসিকতার পরিবর্তন। ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি ফর ওয়ার্কার্স এডুকেশন (এনসিসিডব্লিউই)-এর চেয়ারম্যান বাদল খান বলেন, কার্যকর অন্তর্ভুক্তি সম্ভব কেবল শ্রম অধিকারভিত্তিক একটি পদ্ধতির মাধ্যমে, যার ভিত্তি হতে হবে অন্তর্ভুক্তি ও সমতা। বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট তাহমিদ আহমেদ বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থানের জন্য শুধু নীতিই যথেষ্ট নয়, এটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতির অংশ হতে হবে। কর্মীদের মর্যাদা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম শফিউজ্জামান বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক শ্রমবাজার কেবল উন্নয়নের লক্ষ্য নয়; এটি সম্মান, ন্যায়বিচার এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার পথ। নারী ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, নারীদের ঘর থেকে কর্মস্থলে যাতায়াতে নিরাপত্তার অভাব, গণপরিবহনে যৌন হয়রানি, এমনকি কর্মস্থলেও নিরাপত্তাহীনতা তাদের অংশগ্রহণে বড় বাধা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত