চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ১০নং কেওচিয়া ইউনিয়নে নেই কোনো সরকারি খেলার মাঠ। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি, একটি মাঠ না থাকায় এখানকার ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এর ফলেই বিপথে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। কিশোররা ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাং, রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসার মতো অপরাধে।
সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে খেলার মাঠ গড়ে তোলার নির্দেশনা থাকলেও কেওচিয়ায় তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ ইউনিয়নে রয়েছে একাধিক প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের কোনোটিতেই খেলার উপযুক্ত মাঠ নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় শেষে খেলাধুলা বা শরীরচর্চার পরিবর্তে সময় কাটায় অলসভাবে, অনেকেই মোবাইল গেম, ইন্টারনেট বা আড্ডা দিয়ে। এসবেরই সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীচক্র।
স্থানীয়রা জানান, কিশোরদের অনেকেই এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় গঠিত কিশোর গ্যাংয়ে সক্রিয়। তারা এলাকায় প্রভাব বিস্তার, ভয়ভীতি দেখানো, এমনকি মাদক বহন ও সাপ্লাইয়ের কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে। তাদের অনেকে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া হলেও পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
একজন স্কুলশিক্ষক জানান, আমরা পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করতে চাই। কিন্তু নিজস্ব খেলার মাঠ না থাকায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেক শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক বিকাশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুকিশোরদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে খেলাধুলার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেলাধুলা শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি আত্মনিয়ন্ত্রণ, দলগত চেতনা, সহনশীলতা ও দায়িত্ববোধ শেখায়। খেলার মাঠ না থাকলে শিশুদের মধ্যে নেতিবাচক ও ধ্বংসাত্মক অভ্যাস গড়ে ওঠে যা সমাজের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ইউনিয়নে খেলার মাঠের জন্য জায়গার সংকট রয়েছে, তবে এলাকাবাসীর দাবির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেওচিয়া ইউনিয়নের একজন সমাজকর্মী মোজাম্মেল হক আব্দুল্লাহ বলেন বলেন, শুধু পুলিশি নজরদারিতে কিশোর অপরাধ বন্ধ হবে না। তাদের বিকল্প পথ দেখাতে হবে। একটি মাঠই পারে অনেক কিশোরকে অপরাধের পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে।