ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বিনোদনে নতুন মাত্রা যোগ করবে কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক

বিনোদনে নতুন মাত্রা যোগ করবে কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক

চট্টগ্রামে বিনোদনের জন্য নতুন মাত্রা যোগ করবে কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক। জানা যায়, কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে নগরীর চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত আউটার রিং রোড প্রকল্পে ‘কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক’ করার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের আদলে এটি হবে নগরীর অন্যতম পরিকল্পিত নতুন বিনোদন কেন্দ্র। এর অংশ হিসেবে কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকবে ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন, বেঞ্চ ও গ্যালারি, কিড জোন এবং ফুটওভার ব্রিজসহ নানা সুবিধা। প্রায় ৬০ লাখ নগরবাসীর জন্য পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ছাড়া আর কোনো উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র নেই। যা নগরীর একেবারে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত।

এদিকে, নগরীর দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে বাকলিয়া এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য বিনোদনের তেমন কোনো স্পট নেই। এসব বিবেচনা করেই চাক্তাই-কালুরঘাটের প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ নদীতীরে বাঁধ কাম চার লেন সড়কে গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন বিনোদন প্রান্ত। ‘কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক’ প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে অন্যতম হলেন সিডিএ’র সাবেক প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি শাহীনুল ইসলাম খান। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে আউটার রিং রোড প্রকল্পে নদীর পাড়ে স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়েছে। এর পাশেই রাস্তার ঢালে দ্বিতল কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। ছোট আয়তনের এই স্থাপনাগুলোর নিচে থাকবে টয়লেট সুবিধা ও উপরের অংশে থাকবে ফুডজোন। যাতে উপরে বসে দর্শনার্থীরা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে। তবে এখানে বেশি অবকাঠামো করা হবে না। এই পরিকল্পনাবিদ আরও বলেন, নদীর দিকের ঢালু অংশে গ্যালারির মতো করে বসার ব্যবস্থা করবো। একইসঙ্গে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেন থাকবে। গ্যালারির কিছুদূর পরপর ময়লার বিন থাকবে, যাতে মানুষ ময়লা নির্ধারিত বিনে ফেলতে পারে। এছাড়া পার্কিং সুবিধাও থাকবে। একসময় নগরীর অনগ্রসর ও অনুন্নত এলাকা হিসেবে পরিচিত বাকলিয়ায় সিডিএ’র এমন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পুরো বাকলিয়া এলাকার চিত্র বদলে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাকলিয়াসহ আশপাশের মানুষের জন্য নতুন বিনোদনের স্থান গড়ে ওঠার পাশাপাশি এই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা। এ বিষয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম জানান, কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিনোদন স্পট করার পরিকল্পনা নিয়েছি। এই সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকায় মানুষ পতেঙ্গার মতো সময় কাটাতে পারবেন। নগরবাসীর চিত্তবিনোদনের একটি জায়গা হবে। আমরা প্রাকৃতিক অবয়ব ঠিক রেখে মানুষের জন্য কিছু আয়োজন করতে যাচ্ছি। যেখানে চট্টগ্রামবাসীর জন্য উন্মুক্ত একটি বিনোদনের জায়গা গড়ে তোলা হবে।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের আদলে এটি হবে নগরীর অন্যতম পরিকল্পিত নতুন বিনোদন কেন্দ্র। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নেওয়া ‘কালুরঘাট-চাক্তাই সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প’ ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত