১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রায় সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বিরল ঘটনা নয়। তবে সপরিবারে এই হত্যাকাণ্ডকে প্রকারান্তরে গণহত্যা বলে চিহ্নিত করা অনুচিত হবে না। সেদিন যারা শহীদ হয়েছিলেন, তারা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (৫৫ বছর), তার স্ত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব (৪৫ বছর), ভাই শেখ আবু নাসের সেরনিয়াবাত (৪৭ বছর), জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল (২৬ বছর), দ্বিতীয় পুত্র শেখ জামাল (২১ বছর), কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল (১০ বছর), কামালের নবপরিণীতা সুলতানা কামাল (২২ বছর), জামালের স্ত্রী রোজি জামাল (১৮ বছর), বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি ও মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত (৫৪ বছর), বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি (৩৬ বছর), তদ্বীয় স্ত্রী আরজু মনি (২৬ বছর), তদ্বীয় পুত্র আরিফ (১২ বছর), নাতি সুকান্ত বাবু (৫ বছর), ভ্রাতুষ্পুত্র শহীদ (৩৫ বছর) ও সেরনিয়াবাতের আত্মীয় আবু নঈম রেষ্টু (২০ বছর)। পরিবারের বাইরে ৩২ নম্বরে আর যারা শহীদ হন তারা হলেন- বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্নেল জামিল, সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হক, পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানসহ গোলার আঘাতে মোহাম্মদপুরে নিহত অজানা বেশ কিছু বাঙালি।
লক্ষ করলে দেখবেন, এই হত্যার শিকার বয়োজ্যেষ্ঠ, নিরীহ নারী, নির্বিবাদ যুবক ও তরুণ এবং নাবালক শিশু। ৫৫ বছর বয়সে মহান জাতির মহান স্থপতিকে দেশের মায়া, জনগণের মায়া ও পৃথিবীর মায়া ছেড়ে যেতে হলো। তার জন্ম ১৯১৭ সালের ১৭ মার্চ। সসীম এই জীবনে তিনি প্রথমেই চিহ্নিত হয়েছিলেন একজন ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক, একজন সমাজসেবক হিসেবে ও একজন অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী পুরুষ হিসেবে। তারপরে তিনি রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হন এবং পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত হন। তিনি যে পাকিস্তানের স্বপ্নে বিভোর ছিলেন, সে পাকিস্তান ১৯৪০ সালের লাহোরে প্রস্তাবভিত্তিক পাকিস্তান ছিল না, ছিল ১৯৪৬ সালের বিকৃত দিল্লি প্রস্তাব ভিত্তিক। সেকারণে পাকিস্তানের জন্মলগ্নে অর্থাৎ ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট শেখ মুজিব বাঙালির জন্য স্বতন্ত্র আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন কলকাতার বেকার হোস্টেলে বসে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ঢাকায় এসে তিনি গণতান্ত্রিক যুবলীগ গঠন করেন, ছাত্রলীগ গঠন করেন এবং ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেন। ১৯৪৯ সালে জেলে থাকাবস্থায় তাকে নবগঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করা হয়। ১৯৪৯ সালে তিনি জেলে গিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে; আন্দোলনে জড়িয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের ছাত্রত্বও হারিয়েছিলেন। তবে তাকে জেলে রাখা হয় ১৯৫২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত।
বঙ্গবন্ধু খেতাব লাভের পর তিনি বলতে গেলে সারা জাতির প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন, সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি তা জনমনে সুদৃঢ়ভাবে গ্রন্থিত করার প্রয়াস নেন। সুযোগও এসে যায়। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে ১৬৭ পদে জয়ী হয়ে নিয়ে একচ্ছত্র নেতার আসনে অধিষ্ঠিত হন। তিনি জানতেন তাদেরকে ক্ষমতায় বসতে দেওয়া হবে না। তাই তিনি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সরকারপ্রধান ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে প্রয়োজনে সশস্ত্র যুদ্ধের সহযোগিতা চেয়ে রাখেন। এ সময় বিএলএফ বা বাংলাদেশ লিবারেশন ফ্রন্টকে বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সে রূপান্তরিত করা হয়। স্বাধীনতার ঘোষণার প্রস্তুতি চলতে থাকে। অবস্থার গতি ও দিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তিনি ৭ মার্চ ১৯৭১ সালে প্রথমে বাঙালিদের জন্য এবং ২৬ মার্চ বাঙালি ও সারা বিশ্বের জনগণের উদ্দেশে স্বাধীনতার দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা দেন। তাকে বন্দি করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হলেও তার নির্দেশিত ও প্রদর্শিত পথে মুক্তিযুদ্ধ ১৬ ডিসেম্বর যৌক্তিক পরিণতি লাভ করে। তার আগে সারা জাতি তাকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ও জাতির পিতার অভিধায় অভিসিক্ত করে।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। রাষ্ট্রপ্রধান থেকে সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়ে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্বাসন ও যুদ্ধতাড়িত কোটি মানুষকে স্বঅবস্থানে পুনঃস্থাপনসহ স্বল্প সময়ে অভাবনীয় সব অর্জন দৃশ্যমান করেন। ষড়যন্ত্রকারী ও স্বাধীনতার শত্রুরা তাকে উচ্ছেদ করে বাংালাদেশকে পাকিস্তানের একটি প্রদেশে রূপান্তর কিংবা কনফেডারেশনের স্বপ্ন দেখতে থাকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। অজুহাত ও অপবাদে হিসেবে অনেক মিথ ও মিথ্যাচারের অবতারণা করলেও তার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল বাকশাল বা একদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ। বাকশাল সম্পর্কে অধ্যাপক নূরুল ইসলামের নিম্নোক্ত পর্যবেক্ষণটি অবলোকন করলে বুঝা যাবে যে, বঙ্গবন্ধু কী জন্য বাকশাল গঠন করেছিলেন ঃ প্রফেসর ইসলাম- saw it "as a last ditch effort to save the country from economic chaos and political disintegrations. It was like a lonely ride through a thick forest in a dark stormy night marked by frequent flashes of lighting and thunder. It was a journey full of risks and uncertainty. Nonetheless, it held out the hope that one would reach the other side in the morning and find a new, land-scape bathed in brilliant sunshine’’.. স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য তিনি তার প্রতিশ্রুতি রেখে গেছেন।
সে প্রত্যাশা যে পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের হাজারো সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করে। একটি বড় সমস্যা ছিল প্রত্যাশার বিপ্লব। এ কারণে আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো ছিল বড্ড স্পর্শকাতর, তাই তারাও সমস্যাকে অতিরঞ্জিত করেছিল। দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল; কিন্তু জনগণ তাকে মানবসৃষ্ট সমস্যা ভাবেনি। বাসন্তির জাল পরাটাকে হয়তো তারা বস্ত্রের সংকট হিসেবে দেখেছে; কিন্তু একবারও ভেবে দেখেনি যে, সে সালে একটি জাল দিয়ে ক’টি শাড়ি কিনতে পারা যেত। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে অবারিত স্বাধীনতা লিপ্সু ও ভোগীরা সংবাদপত্রগুলোকে ব্যবহার করেছিল।
একদলীয় গণতান্ত্রিক শাসনের অপূর্ণতা নিয়েও তার সুফল সে সালেই প্রতিভাত হতে শুরু করল। বঙ্গবন্ধু প্রায় সব বড় বড় নেতার সমর্থন লাভ করেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হতে থাকে, সীমান্তে চোরাচালান প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। কালোবাজারি ও রেশন আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করলে অবস্থার উন্নয়ন ঘটে।
১৯৭৫ সালের আগস্ট মাস নাগাদ পরিস্থিতির আরও উন্নতি ঘটে। অনুকূল আবহাওয়া এবং আমন ফসল ভালো হওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে। এরই মধ্যে শেখ মুজিবের নবনিযুক্ত অফিসাররা তাদের এক মাসের প্রশিক্ষণ শেষ করে কাজে যোগ দিতে থাকেন। ইতিপূর্বেই ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন পর্যায়ের প্রশাসনিক কাঠামোর অধীনে নবযাত্রারম্ভের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল।
তারপর বঙ্গবন্ধুকে প্রায় সপরিবারে হত্যা করা হলো। যে বাকশাল কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গ শুরুই হলো না, সেটাকে প্রধান অজুহাত হিসেবে তুলে ধরা হয়।
২১ বছর যাবত এ দেশকে ও জাতিকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে একটিও ভালো কথা কোনো সরকার কিংবা তার বশংবদরা জানতে দেয়নি। ২১ বছর পর তারই কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে মানুষ বিশেষত নতুন প্রজন্ম জানতে থাকে। আজকে প্রমাণিত সত্য যে, বাঙালিদের যা কিছু সত্য, মহান ও পথনির্দেশক, তার সবই সূচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
এমনকি তার আমলে সাধারণ মানুষের অন্ন, বস্ত্র, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসা কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং শোষণ ও শ্রেণিবঞ্চনা নিরসনে গৃহীত পদক্ষেপগুলো মানুষ ভুলে যায়নি, তাই ২০০৪ সালে বিবিসির বিশ্বব্যাপী এক জরিপে প্রমানিত হলো যে, বঙ্গবন্ধু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। কারণ তিনি শুধু একটি জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেননি তিনি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি মানবকল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধু যদি জীবিত থাকতেন, তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নের পর্যায় স্বাধীনতার দশ বছরের মাথায় এসে যেত। শোষণ-বঞ্চনার চির অবসানের স্থির ও দৃঢ় ভিত্তি তৈরি হতো।
প্রবন্ধের কলেবর বেড়ে যাচ্ছে, তারপরও ১৫ আগস্টে নিহত আরও কয়েকজনের সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলতেই হবে।
প্রথমে আসে বঙ্গমাতার কথা। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ডাকনাম ছিল রেণু। অতি অল্প বয়সে পিতা-মাতার বিয়োগের কারণে তাদের দু’বোনের সম্পত্তি রক্ষার দাওয়াই হিসেবে রেণুর দাদা শেখ আবুল কাশেম শেখ মুজিবের সঙ্গে তিন বছর বয়সি রেণুর বিয়ে পাকাপাকি করে যান। ১২ বছর বয়সে তাদের আনুষ্ঠানিক বিবাহ হয়। সে সময় থেকে তিনি অতি প্রতিব্রতা নারী হিসেবে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তার দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করে গেছেন। তিনি ছিলেন স্বামীর Friends, Philosopher and Guide. অনেকেই বিশেষত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন যে, রেণুর মতো এমন সর্বংসহা মহিলা শেখ মুজিবের ঘর আলোকিত করে না এলে শেখ মুজিব কোনো বড় রাজনীতিবিদ হতে পারতেন না, বঙ্গশার্দুল হতেন না, বঙ্গবন্ধু হতেন না, জাতির পিতা হতেন না কিংবা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হতেন না। স্বশিক্ষায় শিক্ষিত রেণু ছিলেন সর্বকাজে গুনান্বিত। তিনি পদ-পদবিধারী কোনো রাজনীতিবিদও ছিলেন না, ছিলেন না কোনো স্বীকৃত ব্যক্তিত্ব।
তার দু’পুত্র শহীদ শেখ কামাল ও শহীদ শেখ জামাল প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ও সেনা অফিসার ছিলেন। শেখ জামাল মুক্তিযুদ্ধে আমার সঙ্গে ট্রেনিংকালে একই তাঁবুর বাসিন্দা ছিলেন। যেখানে শেখ ফজলুর রহমান মারুফও ছিলেন। আজ গভীর বেদনা নিয়ে শেখ জামালকে স্মরণ করি। কামাল, জামাল, শিশু রাসেলসহ তারা সবাই বেঁচে থাকলে তারা হতেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত জাতির কর্ণধার। জীবিত থাকাবস্থায় কামালের ছাত্র আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, খেলাধুলা, ক্রীড়া সংগঠন সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তার স্ত্রী ছিল তদানীন্তন সারা পাকিস্তান বা পূর্ব পাকিস্তান কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি কৃতী খেলোয়াড় ও মেধাবী ছাত্রী।
পরিবারের অন্যতম সদস্য আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ন্যাপ রাজনীতিতে অধিষ্ঠিত থাকলেও তিনি মূলত ন্যাপকে ধারণ করেই অন্যসব স্বাধীনতাপন্থির মুখপাত্র ছিলেন। তিনি শেখ মনির খালু ও শ্বশুর ছিলেন। মনির স্ত্রী আরজু মনি বিশাল পরিবার সামলিয়ে রাজনীতিরও সেবা করেছেন। শেখ আবু নাসেরের কথা হয়তো আমরা ভুলে গেছি। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং প্রায়ই তার ব্যবসাস্থল খুলনায় কাটাতেন।
তারপরে আসি শেখ ফজলুল হক মনির কথায়। তিনি শেখ মুজিবের ভাগনে ছিলেন বটে, তবে নিজ গুণ ও দক্ষতায় তিনি ছাত্র রাজনীতিতে এসেছিলেন। তিনি আইয়ুব খানের সেনাশাসন আমলেই ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, ইস্টবেঙ্গল লিবারেশন ফ্রন্টের কর্ণধার; ১৯৬২ শিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম রূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোনায়েম খানকে প্রতিহতকারী ছিলেন।
আমাদের পরম সৌভাগ্য, সেদিন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা বিদেশে ছিলেন বলে বেঁচে যান। শেখ সেলিম ও আব্দুল্লাহ ঘটনাচক্রে বেঁচে যান। র্বাদপুষ্ট ছিল। আজকে তাদের ঘৃণার সঙ্গে ধিক্কার দিই। বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই সব শহীদের প্রতি, সম্মান জানাই যারা বিভিন্নভাবে হত্যার প্রতিবাদ করেছিল, আন্দোলন করেছিল, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলে সহায়তা করেছিল এবং বিচারে যৌক্তিক পরিণত টেনেছিল। এখনও কমপক্ষে পাঁচ ঘাতক ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। নেপথ্যের কুশীলবদের ব্যাপারে কোনো কিছু করা সম্ভব হয়নি। তবে মরণোত্তর পুরস্কার দেওয়া সংগত হলে, ষড়যন্ত্রকারীদেরও মরণোত্তর বিচার হতে পারে। হত্যা-রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য গঠিত কমিশনের কার্যক্রম বেগবান করা হবে বলে জেনেছি। অপেক্ষায় রইলাম।
লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপাচার্য ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ