ঢাকা মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পিলখানা হত্যাকাণ্ড

দীর্ঘ কারাবাসের পর ভারসাম্যহীন অবস্থায় ল্যান্স কর্পোরাল ফজলুরের জামিন

দীর্ঘ কারাবাসের পর ভারসাম্যহীন অবস্থায় ল্যান্স কর্পোরাল ফজলুরের জামিন

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ১৬ বছর পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ল্যান্স কর্পোরাল ফজলুর রহমান।

ফজলুর রহমান কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের ধাউরারকুঠি গ্রামের মৃত শাহার আলীর সন্তান। ৭ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ৩য়। দেশ মাতৃকার সেবার ব্রত নিয়ে যোগ দেন তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসে (বিডিআর)। যৌবনের দিনগুলো কেটেছে দেশের সীমান্ত রক্ষায় চৌকস সিপাহি হিসেবে। পরে তিনি সিপাহি থেকে ল্যান্স কর্পোরাল পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। কর্মস্থল ছিল বিডিআর হেডকোয়ার্টার পিলখানায়। সেখানে থাকায় ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফেঁসে যান। বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা হয় তার নামে ।

প্রহসনের বিচারে ১৬ বছর কারাভোগ করে সদ্য জামিন পান তিনি। কারাগারে থাকাকালীন মা-বাবা, বোনসহ ৯ জন নিকট আত্মীয় হারিয়েছেন তিনি। এসব আত্মীয় মারা গেলেও এক নজর দেখা কিংবা জানাজায় অংশ নেয়ার সুযোগ হয়নি তার। কারাগারে দেখা করার তেমন সুযোগ মেলেনি পরিবারের সদস্যদের। এখন মুক্ত হলেও ফজলুর রহমান হয়ে পড়েছেন কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ফজলুর রহমান কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও তার শারীরিক অবস্থা ও চাকুরি না থাকায় সামনের দিন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন স্ত্রী রাশেদা।

রাশেদা জানান, ১৬টি বছর সমাজের নানা সমালোচনা সহ্য করে খেয়ে না খেয়ে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করেছি। নিজের সন্তান না থাকায় ননদের সন্তানকে নিয়ে মানুষ করেছি। ছোট থেকেই সেই মেয়ে তার বাবাকে (ফজলুর রহমান) খুঁজেছে, আমি কোনো উত্তর দিতে পারি নাই। এখন স্বামী ফিরে আসলেও কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে।

ফজলুর রহমানের বড় ভাই ছামাদ আলী বলেন, সংসারে অভাব অনটন থাকায় ফজলুর রহমানের লেখা পড়া বন্ধ করে বিডিআরে পাঠাই। সে খুব ভালো ছাত্র ছিল, ছোট দুই ভাইকে তার অনুপ্রেরণায় সেনাবাহিনী-তে দেই। ফজলুর রহমান দেশের জন্য কাজ করেছে। হঠাৎ কি থেকে কি হয়ে গেল বুঝতে পারি নাই।

ফজলুর রহমান বলেন, এ মামলার সাথে কোন সংশ্লিষ্টতা ছিল না বলে মুক্ত হয়েছেন তিনি। ১৬ বছরে বাবা-মা, বোন মারা গেছেন, ২ ফুফু মারা গেছেন, জ্যাঠা-মামাসহ আরও কয়েকজন নিকট আত্মীয় মারা গেছেন তাদেরও দেখতে পারি নাই। তাদের তো আর ফিরে পাব না। তাদের না দেখার কষ্ট নিয়েই থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমার চাকরিটাই ছিল একমাত্র সম্বল। তিনি সরকারের কাছে চাকুরিতে পুনর্বহালের দাবি জানান।

কারাবাস,ভারসাম্যহীন,পিলখানা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত