আসন্ন সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই প্রত্যাশার কথা জানান।
গভর্নর জানান, মূল্যস্ফীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বিনিময় হার বা এক্সচেঞ্জ রেট। সেটিকে নিয়ন্ত্রণে আনায় বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরেছে এবং জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে গেছে। তার ভাষায়, 'এক্সচেঞ্জ রেট বাজারের উপর ছেড়ে দেওয়ার পর তেমন বড় ধরনের পরিবর্তন হয়নি, এতে করে বাজারে আস্থা ফিরে এসেছে এবং মূল্যস্ফীতি এখন একটি গ্রহণযোগ্য অবস্থার দিকে যাচ্ছে।'
খাদ্যপণ্যের দামের উল্লেখযোগ্য হ্রাস তুলে ধরে গভর্নর বলেন, 'আগে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল সাড়ে ১৪ শতাংশ, বর্তমানে তা কমে সাড়ে ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও কমে ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।' তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যদ্রব্য, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম কমার যে ধারা দেখা যাচ্ছে, তার সুফলও বাংলাদেশ পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মুদ্রানীতির ক্ষেত্রে কড়াকড়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করাও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ ও পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য ও শিল্প উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এর আগে সোমবার বিকেলে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি টেলিভিশনে একযোগে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম বাজেট। বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি দেশের ইতিহাসে প্রথম বাজেট, যার আকার আগের বছরের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে।