‘রাসূল (সা.) বার্তা বাহক’ এমন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে জুমার নামাজ শেষে মসজিদে খতিবকে হত্যা চেষ্টার পর কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গুরুতর আহত হওয়া নূরুর রহমান মাদানীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যা চেষ্টাকালে হামলাকারীর চাপাতিতে একটি চিরকুট ছিল। তাতে লিখা ছিল, ‘আমার নবীজিকে অপমান করার কারণে তাকে হত্যা করা হলো।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নাজমুল হোসেন রোববার (১৩ জুলাই) এ প্রতিনিধির সাথে কথা হলে তিনি জানান, আদালতে ১৬৪ ধারায় আসামি তার জবানবন্দিতে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। তিনি বলেছেন, খতিব নূরুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে কুপিয়েছেন তিনি। তবে তার ক্ষোভ, তিনি তাকে হত্যা করতে পারলেন না। রোববার আদালতে শুনানি হয়নি। বর্তমানে মামলার তদন্ত চলছে, যে কোনো একদিন শুনানি করে আসামিকে রিমান্ডে নেওয়া হবে। বর্তমানে আসামি বিল্লাল হোসেনকে আদালতের নির্দেশে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ খতিব মাওলানা আ ন ম নূরুর রহমান মাদানীকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় হামলাকারী বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে হামলাকারী বিল্লাল হোসেন। চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই নাজমুল হোসেন তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন আদালতে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে চাঁদপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মোয়াল্লেম ও প্রফেসর পাড়া মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা খতিব মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানীর বড় ছেলে আফনান তাকি।
শুক্রবার (১১ জুলাই) চাঁদপুর পৌর এলাকার প্রফেসর পাড়া মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদের মাওলানা আ ন ম নূরুর রহমান মাদানী জুমার নামাজে আলোচনা ও খুতবা নিয়ে ক্ষিপ্ত ছিলেন ওই এলাকার ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন। যার কারণে নামাজ শেষে মসজিদের ভিতরে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্র (চাপাতি) দিয়ে মসজিদের খতিবের ওপর হামলা চালান। এতে করে খতিব মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানী মাথায়, কানে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। পরবর্তীতে মুসল্লীরা তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। এ সময় হামলাকারী বিল্লাল হোসেনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন মুসল্লীরা।
এদিকে মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানীর উপর হামলার পর তীব্র নিন্দার ঝড় উঠে সর্বমহলে। কি কারণে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত চান সচেতন মহল। সেই রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে চলে ব্যাপক সমালোচনা। কেউ কেউ মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানী মারা গেছেন বলেও গুজব ছড়ায়।
মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানীর বড় ছেলে আফনান তাকি বলেন, আমার বাবার উপর হামলাকারী ব্যক্তির বিচার দাবি করছি। আমার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল শনিবার রাতে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসি। তিনি বর্তমানে ঢাকা হলি কেয়ার হসপিটালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং শঙ্কামুক্ত আছেন।
চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বাহা মিয়া জানান, নূর রহমান মাদানীর বড় ছেলে আফনান তাকি বাদি হয়ে আসামি বিল্লাল হোসেনের নামে থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। আসামি বিল্লাল হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।