ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও পীর চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতৃবৃন্দের ওপর হামলাকারীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যায় পটিয়া শান্তিরহাট এলাকায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম পূর্ব জেলার প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মুফতি রেজাউল করীম বলেন, গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধীনে থাকা একটি জেলা। সারা বাংলাদেশ যখন একযোগে স্বৈরাচারী হাসিনাকে উৎখাত করেছে তখন গোপালগঞ্জে হাজার হাজার খুন, গুম ও হাজার কোটি টাকা পাচারকারী শক্তির পক্ষে কেউ প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে দেশপ্রেমিক ছাত্র নেতৃত্বের ওপরে হামলা করবে, তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখবে, তা মেনে নেয়া যায় না। দ্রুততার সাথে অবরুদ্ধ নেতৃবৃন্দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের উপর হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন কোন কোন মিডিয়া হামলাকারী ফ্যাসিবাদের দোসরদের ‘গ্রামবাসী, এলাকাবাসী’ অভিহিত করেছে। এর পেছনের কারণ সুস্পষ্ট। তারা বিশ্বকে বোঝাতে চায় যে, হাসিনার উৎখাতের আন্দোলন কোন গণঅভ্যুত্থান ছিল না। গ্রামবাসী এখনো হাসিনার জন্য রাস্তায় নামে। আদতে পুরোটা মিথ্যা বয়ান। যারা এনসিপির ওপরে হামলা করেছে তারা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী। এদেরকে আওয়ামী লীগের পান্ডা হিসেবেই প্রচার করতে হবে। যারা যারা এই হামলার সাথে জড়িত ছিল তাদেরকে অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ফ্যাসিবাদের পক্ষ হয়ে এখনো কেউ জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দের ওপরে হামলা করবে তা মেনে নেয়া যায় না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম পূর্ব জেলার উদ্যোগে জেলা সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুছ-এর সভাপতিত্বে আয়োজিত তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. বেলাল নূর আজিজী, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মুহাম্মাদ জান্নাতুল ইসলাম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ শরিফুল আলম চৌধুরী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ মিশকাতুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম পূর্ব জেলার সহ-সভাপতি মাওলানা জাহিদুল হক, জেলা সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মুদ্দাসিসর, জয়েন্ট সেক্রেটারি কাজী আবরার হানিফ মারুফ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য এম জুনায়েদুল হক, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম পূর্ব জেলা সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম আজিজি, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম পূর্ব জেলার সভাপতি আব্দুল আজিজ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম পূর্ব জেলার সভাপতি মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, পটিয়া থানা সভাপতি মাওলানা মামুনুর রশীদসহ থানা ও ইউনিয়ন দায়িত্বশীলগণ বক্তব্য রাখেন।
এসময় তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। তার মধ্যে চট্টগ্রাম ১২-তে (পটিয়া) ড. বেলাল নূর আজিজি, চট্টগ্রাম ১৪-তে (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুল হামিদ। চট্টগ্রাম ১৫-তে (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) মুহাম্মাদ শরীফুল আলম চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়।
চরমোনাই পীর সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির এই সময়েও স্বৈরাচারের দোসররা যে দুঃসাহস দেখিয়েছে তা সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতার বড় একটি দৃষ্টান্ত। পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার এবং এর সাথে জড়িতদের বিচারের ধীরগতির কারণেই এরা আজকে এই সাহস করেছে। তাই বলবো, কেবল ঢাকায় গুটিকয়েকজনকে বিচারের আওতায় আনলে হবে না, বরং সারা দেশে স্বৈরতন্ত্রের সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনুন। এই ধরনের দুঃসাহস জাতি আর দেখতে চায় না।