
পঞ্চম শ্রেণির সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত পত্র বাতিল-এর দাবিতে রংপুরে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন সোসাইটি।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের (কাচারী বাজার) সামনে উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। পরে পর্যায়ক্রমে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ও সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয় এবং পাশাপাশি বিভাগীয় উপ-পরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধন ও স্মারকলিপি সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক কৃতিত্ব অর্জন করেছে। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ১৭ জুলাই প্রকাশিত পত্রের মাধ্যমে জানা যায়, কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে শুধুমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পত্রটি বৈষম্যমূলক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বৃত্তি শুধু একটি আর্থিক অনুদানই নয় এটি একটি শিশুর আত্মবিশ্বাস, মেধার স্বীকৃতি এবং শিক্ষাগত অগ্রগতির অনুপ্রেরণা। যখন একটি শিশু দেখবে তার বন্ধুরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে কিন্তু সে অংশগ্রহণ করতে পারছে না শুধুমাত্র তার বিদ্যালয়ের স্বীকৃতির ধরন ভিন্ন বলে তখন তার মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং শিশুদের শিশুমনেই একটি বৈষম্যমূলক মনোভাব তৈরি হবে। কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যদি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ মানসিক চাপ ও যন্ত্রণার সম্মুখীন হবে, যার দায়দায়িত্ব সরকারের উপরেই বর্তাবে। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী সরকার। সেই সরকারের আমলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার বৈষম্যের শিকার হবে এটি অপ্রত্যাশিত। এর ফলে কিন্ডারগার্টেন ও বহু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আমরা এই পত্রটিকে প্রত্যাখান করছি এবং প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে প্রধান উপদেষ্টাকে ইঙ্গিত করে বক্তারা বলেন, আপনি আমাদের অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের আশা ও ভরসার প্রতীক। দেশের জনগণ আপনার প্রতি আস্থাশীল। সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ বিশাল জনগোষ্ঠীকে যাতে আন্দোলনে নামতে না হয় সেই বিষয়ে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন সোসাইটির সভাপতি মো. আবু তালেব এর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী’র সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহ্ মো. মাহবুবুর রহমান, সহ-সভাপতি মো. সাদিকুল ইসলাম, মো. তাহমিদুর রহমান, রংপুর বিভাগীয় সভাপতি ড. মো. খায়রুল আনাম, যুগ্ম-মহাসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. আসাদুজ্জমান বিপ্লব, মো. আব্দুল আখের রাশেদী, মো. আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সচিব মো. হুমায়ুন কবির রিপন, শেখ মো. আজহারুল ইসলাম, দপ্তর সচিব মো. লুৎফুল্লাহ, অর্থসচিব মো. মিজানুর রহমান, শিক্ষাসচিব মো. খায়রুল আলম, প্রচার ও প্রকাশনা সচিব মো. আব্দুল আউয়াল, রংপুর জেলা সভাপতি মো. আব্দুল মাবুদ, সচিব গোলাম মেহেদী, রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম, সচিব মো. আতিকুল ইসলামসহ কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সকল শিক্ষক ও অবিভাবকবৃন্দ।