ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

টঙ্গীবাড়ীতে পাটের আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত কৃষক-কৃষানী

টঙ্গীবাড়ীতে পাটের আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত কৃষক-কৃষানী

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কৃষক-কৃষানীরা পাটের আঁশ ছাড়ানো ও সংরক্ষণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর টঙ্গীবাড়ীতে পাটের উৎপাদন অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে।

কৃষকদের মতে, সঠিক সময়ে চাষাবাদ, উপযুক্ত জলবায়ু এবং আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার এর মূল কারণ। এই বছর উর্বর জমিতে পাট চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কৃষকদের উৎপাদনেও যথেষ্ট গতি এসেছে।

টংগিবাড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার পৃতীষ চন্দ্র পাল আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, উপজেলার অধিকাংশ জমিতে পাটের ফলন ভালো হয়েছে। এবার প্রায় ৭৭৪ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে যা টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কৃষির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পাট চাষের জন্য উপযুক্ত জলবায়ু এবং পরিবেশ এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্য দারুণ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

এছাড়া পাট কাটার পরই পানিতে জাক দিয়ে ভিজিয়ে সপ্তাহখানেক পানিতে ডুবিয়ে রাখার পর শুরু হয় পাট গাছ থেকে আঁশ ছাড়ানোর মহাযজ্ঞ। এই প্রক্রিয়া একটি সময়সাপেক্ষ এবং দক্ষতা প্রয়োজনীয় কাজ, যেখানে পাটের আঁশকে পাট গাছ থেকে আলাদা করা হয়। পাটের আশ ছাড়ানো শ্রমসাধ্য হলেও এর মধ্য দিয়ে কৃষকরা ভালো মুনাফা অর্জন করেন।

স্থানীয় কৃষক তাহিদুল শিকদার (৩৬) জানান তারা (টঙ্গীবাড়ীর) পুরুষ ও মহিলারা একত্রিত হয়ে তাদের কাজ ভাগ করে নেন। কেউ পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজ করেন আবার কেউবা ছাড়ানো আঁশ পানিতে পরিষ্কার করেন। এরপর তা শুকানোর জন্য বিভিন্ন গাছের সাথে বাঁশ অথবা রশি বেঁধে আড়া বানিয়ে রোদে দেন। তারপর ৫ থেকে ৭ দিন শুকানোর পর তা সংরক্ষণ করে উপজেলার বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য নেওয়া হয়, অনেক সময় দেখা যায় পাট কেনার পাইকার বাড়িতেও আসেন ক্রয় করার জন্য।

এছাড়া পাট গাছের কাঠি (খড়ি) দিয়ে বানানো হয় নানা ধরনের বেড়া, রান্না ঘরের চালা ও রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া তারা আরও জানান, পাটের আশ ছাড়ানোর পর সেগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি পাট যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করা হয়,তাহলে তার গুণগত মান নষ্ট হতে পারে এবং বাজারে বিক্রি করার সময় ক্ষতি হতে পারে।

টঙ্গীবাড়ী কৃষকরা পাট সংরক্ষণের জন্য প্রাচীন পদ্ধতির পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। পাট গুছিয়ে স্টোর করা, পাটের মাপ অনুযায়ী প্যাকেট তৈরি করা এবং পরে সেগুলো সঠিকভাবে শুকানোর মাধ্যমে পাটের মান বজায় রাখা হচ্ছে। বর্তমানে কৃষকদের মধ্যে পাট সংরক্ষণ নিয়ে বেশ সচেতনতা তৈরি হয়েছে এবং তারা প্রশিক্ষণও গ্রহণ করছে।

পাট ব্যবসায়ী আব্দুলাহ বেপারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি বলেন পাটের উৎপাদন ভালো হওয়ার কারণে এই বছর পাটের বাজার মূল্যও তুলনামূলকভাবে ভালো। কৃষকরা তাদের পাট বিক্রি করে ভালো লাভ পাচ্ছেন। টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পাট বিক্রির জন্য কিছু স্থানীয় বাজারে অত্যন্ত ভালো পরিবেশ রয়েছে, যেখানে কৃষকরা তাদের পাট সরাসরি বিক্রি করতে পারেন।

সরাসরি বাজারে বিক্রি করলে কৃষকরা মধ্যস্বত্বভোগীদের দখলে পড়েন না, ফলে তারা তাদের পরিশ্রমের পূর্ণ মূল্য পাচ্ছেন। এর ফলে কৃষকরা আগের বছরের তুলনায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আরও বেশি আয় করতে পারছেন।

পাটের আঁশ,কৃষক-কৃষানী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত