
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (৫৫ বিজিবি) ১১টি সফল অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ৭৪ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের ভারতীয় চোরাচালানী পণ্য ও মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজিলুর রহমান।
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার সীমান্ত হতে আনুমানিক ৫ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর নামক এলাকায় বিজিবির একটি বিশেষ দল অভিযান পরিচালনা করে। এ অভিযানকালে সন্দেহজনক একটি কাভার্ড ভ্যান আটক করে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চোরাচালানী পণ্য জব্দ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—ভারতীয় জিরা, জিলেট ব্লেড ও কাবেরী মেহেদী। এসব পণ্যের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬৯ লাখ ৮০ হাজার ৮০০ টাকা।
বিজিবির তথ্যমতে, এ চোরাচালানটি কাভার্ড ভ্যানযোগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে পাচারের উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল।
এছাড়াও হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় ৫৫ বিজিবির টহল দল পৃথক অভিযান চালায়। এসব অভিযানে ৩৫ কেজি ভারতীয় গাঁজা, ৫০ বোতল ইস্কফ সিরাপ, ভারতীয় চিনি, সেগুন কাঠ, আতশবাজি, মশার কয়েল, ফুচকা, বাইসাইকেল ও দেশীয় রাবার জব্দ করা হয়। এসব পণ্যের মূল্য প্রায় ৪ লাখ ৪২ হাজার ৬০০ টাকা।
পরিচালিত অভিযানের বিষয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিলুর রহমান বলেন, সীমান্তে চোরাচালান এবং মাদক পাচার প্রতিরোধে বিজিবি সব সময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার পাশাপাশি তরুণ সমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, বিজিবি জনগণের আস্থা ও নিরাপত্তার প্রতীক। দেশ ও নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় ভবিষ্যতে এ ধরণের অভিযান আরও জোরদার করা হবে। একই সঙ্গে জব্দকৃত পণ্যের সঙ্গে জড়িত চোরাচালানী চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করতে বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। মাদক ও চোরাচালান বিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী জনগণকে সহযোগিতার আহবান জানিয়েছে বিজিবি। জব্দকৃত পণ্য আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হবিগঞ্জ কাস্টমস অফিসে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, শুধু গত আগস্ট মাসেই ৫৫ বিজিবির একাধিক অভিযানে প্রায় ২ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩১০ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ও চোরাচালানী পণ্য জব্দ করা হয়েছে। সম্প্রতিক অভিযানগুলো সেই ধারাবাহিকতারই অংশ।
বিজিবির তথ্যমতে, ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার কিছু এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় চোরাচালানী চক্র পণ্য ও মাদক পাচার করছে। তবে বিজিবির গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় নিয়মিত টহল পরিচালনা করে এ ধরণের চক্রকে দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।