
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে মাটিতে নুয়ে পড়েছে রোপা আমন ধান। ফলন ঘরে তোলার আগমুহূর্তে আধা পাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন আমন চাষিরা। ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে মাঠের পাকা ধানগুলো কেটে ঘরে তোলার অপেক্ষায় ছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু কার্তিকের শেষে অসময়ের বর্ষণে পাকা ধানগুলো মাঠে নুয়ে পড়ে। এতে ভারী বর্ষণে ধান ও ভুট্টা সবজি খেতে পানি জমে গেছে। ফলে মাঠের ধান ও ভুট্টা সবজি নষ্ট গেছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) জেলার দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের আমনের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, হলুদ হয়ে আসা ধানের খেতগুলো মাটিতে মিশে রয়েছে। বিঘার পর বিঘা জমির ধান শুয়ে পড়ায় ফলন ও গুণগত মান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা।
দামুড়হুদা উপজেলার কানাইডাঙ্গা এলাকার হাসান আলী হোসেন আলী ২ একর জমিতে আমনের আবাদ করেছেন। ১৫ দিন পর ধান কাটার কথা ছিল তার। তিনি হতাশা নিয়ে বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে আবাদ করেছি। আর যখন কাটার সময় হল, তখন পাকা ধানে মই দিয়ে গেল বৃষ্টি। জমিতে পানি জমে শিষ ভিজে নষ্ট হচ্ছে, ফলন অর্ধেক হয়ে যেতে পারে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন দিনের টানা ও মাঝারি বৃষ্টিতে খেতের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। গাছের গোড়ায় পানি জমে গাছ মরে যাচ্ছে। এতে ভুট্টা ও সবজি চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। অসময়ে বৃষ্টিপাতে ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি খেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এবার ভালো ফলনের আশায় ছিল কৃষকেরা। কিন্তু সে আশা গুড়েবালিতে পরিণত হয়েছে। সবজির খেত নিয়েও তারা চরম বিপদের শঙ্কায় রয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান সরকার জানান, ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে এবং কৃষকদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি আমরা।
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি, যেসব ধান শুয়ে পড়েছে সেগুলো গোছা করে বেঁধে দিতে। এতে কিছুটা হলেও ক্ষতি কম হবে।’
চলতি মৌসুমে জেলায় মোট ৩৬ হাজার ৭৮৪ হেক্টরে আমনের আবাদ করা হয়েছে।