
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য এবং বিএনপি নেতা তোতা চেয়ারম্যানের খুনিদের নিয়ে নোয়াখালী-৫ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ফখরুল ইসলামের নির্বাচনি প্রচারণার প্রতিবাদে নোয়াখালীর কবিরহাটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপির একটি অংশ।
রোববার বিকেলে উপজেলার চরএলাহি গোফুরিয়া মাদ্রাসা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মাদ্রাসা মাঠে এসে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চরএলাহী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মো. ইসমাইল তোতা, চরএলাহী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নরুল হুদা মাস্টার, ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি আব্দুল মালেক, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক রুবেল, যুবদল নেতা একরাম ভূঁইয়া, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ডা. আব্দুর রহিম রনি, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ভাইস-চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, কেন্দ্রীয় সহ-পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বজলুর করিম চৌধুরী আবেদসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগে নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট-সদর আংশিক) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের মনোনয়ন প্রত্যাহারসহ দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছেন দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা।
তারা বলেন, আগামী নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসনে অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও এস. আলম গ্রুপের ব্যবসায়িক পার্টনার ফখরুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়ার পরও আমরা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু গত শুক্রবার ফখরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে আমাদের দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ অনেক নেতাকে ভিন্ন দল থেকে বিএনপিতে এসেছেন বলে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করায় ফখরুল ইসলামের দলীয় মনোনয়ন বাতিল ও তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান নেতাকর্মীরা।
বক্তারা আরও বলেন, বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন তোতা চেয়ারম্যানকে হত্যাকারীরা ধানের শীষের প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলামের সঙ্গে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। মরহুম তোতা চেয়ারম্যানের অনুসারীদের এসব লোকজন হুমকি-ধমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং খুনি ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে বিএনপির দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত ফখরুল ইসলামকে বলতে শোনা গেছে— “আমি যদি বলি, সারাদিন বলেও শেষ করা যাবে না, হাজার হাজার নেতাকর্মী আছেন, এর বড় অংশই অন্য দল থেকে আসা। এমনকি বিএনপির মহাসচিব ফখরুল সাহেবও অন্য দল থেকে এসেছেন। ওবায়দুর রহমান আওয়ামী লীগ থেকে এসে বিএনপির মহাসচিব হয়েছেন, মন্নান ভূঁইয়া ন্যাপ থেকে এসে মহাসচিব হয়েছেন। নোয়াখালীর রাজনীতিতে বরকত উল্লাহ বুলু, জয়নুল আবেদীন ফারুক, শাহজাহান সাহেব—এদের কেউই বিএনপির প্রোডাক্ট না। শাহজাহান সাহেব ন্যাপ থেকে, বরকত উল্লাহ বুলু ও জয়নুল আবেদীন ফারুক জাসদ থেকে এসেছেন। তাহলে এত লোক যদি বিএনপি করতে পারে, সবার চুলকানি শুধু আমাকে নিয়ে কেন?”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট-সদর আংশিক) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “কবিরহাট উপজেলা বিএনপির প্রায় সকল নেতাকর্মীর সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। সবার নাগরিক অধিকার রয়েছে তাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর।”