
নরসিংদীতে শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত ভবন শনাক্ত করেছে প্রশাসন। একইসাথে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্তে করা হয়েছে ৫ সদস্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি।
রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে নরসিংদী জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো শনাক্তে কাজ করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। আগামী বুধবার ভবন পর্যবেক্ষণ করতে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ একটি টিম নরসিংদীতে আসবেন। আগামী তিনদিনের মধ্যে বুয়েটের এ টিম রিপোর্ট অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো থেকে লোক সরানো হবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে গত ৩০ বছরে নরসিংদীর মানুষ রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প দেখেনি। এরই মাঝে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ৩টি ভূমিকম্প হয়। নরসিংদীতে আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্প হতে পারে এমন আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ায় গত রাতজুড়ে আতঙ্কে কাটিয়েছে সাধারণ মানুষ। সন্ধ্যার পর সোশ্যাল মিডিয়া ও লোকমুখে “রাতে বড় ধরনের ভূমিকম্প হবে”-এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে।
সারারাত বহু মানুষ স্থানীয় স্কুল-কলেজের মাঠ, স্টেডিয়াম মাঠ, খোলা জায়গা এবং রাস্তায় অবস্থান করে। শিশু, নারী, বয়স্কসহ পরিবারের সবাই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাইরে থাকেন। এতে পুরো শহরজুড়ে এক ধরনের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়দের অনেকে বলেন, রাতে ঘুমাতে গেলেই ভূমিকম্প হবে-এমন কথা নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ঘরে অবস্থান করতে ভয় পেয়ে তারা বাইরে রাত কাটাতে বাধ্য হন।
এ ব্যাপারে নরসিংদী জেলা প্রশাসন মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন জানায়, ভূমিকম্প নিয়ে যে গুজব ছড়ানো হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো সরকারি সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়নি। গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রশাসন বলে, “ভূমিকম্পের সুনির্দিষ্ট সময় পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। কারো দেওয়া এমন তথ্য মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর।”
তিনি আরো বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন স্থানে গিয়ে সাধারণ মানুষদের বুঝিয়ে ঘরে ফিরিয়ে দেয়। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশে সচেতনতা জরুরি হলেও গুজবভিত্তিক আতঙ্ক অপ্রয়োজনীয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাই সবাইকে যাচাই-বাছাই করে তথ্য গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গুজবে সৃষ্ট এই আতঙ্কে রাতজুড়ে নরসিংদীতে মানুষের দুর্ভোগ তৈরি হলেও সকালে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।