
চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর গুলিতে নিহত বাংলাদেশী যুবক শহিদুল ইসলামের মরদেহ ৮ দিন পর দু'দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলার মেদনীপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত ৬৪মেইন পিলার সংলগ্ন চেংখালী চেকপোস্টে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বিজিবি টিমের নেতৃত্ব দেন ৫৮ বিজিবি মহেশপুর ব্যাটেলিয়ানের সহকারী পরিচালক মুন্সী ইমদাদ হোসেন এবং বিএসএফের নেতৃত্ব দেন ভারতের নদীয়া কৃষ্টগঞ্জ ৩২ ব্যাটেলিয়ানের সীমানগর বিএসএফ ক্যাম্পের কমান্ডার ইন্সপেক্টর সানজিদ রায়।
এই সময় দু'দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে মরদেহ হস্তান্তর করেন বিএসএফ। মহেশপুর-৫৮ ব্যাটালিয়ান সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকালে ভারতীয় পুলিশ মরদেহটি বাংলাদেশী পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে নিহতের বাবা লস্কর আলীর নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে মরদেহ গ্রহণ করানো হয়। এ সময় জীবননগর থানার কর্মকর্তা সহ নিহতের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রটি আরও জানায়, সীমান্তে অনাকাঙ্ক্ষিত এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং তদন্তের যথাযথ দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের লস্কর আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (২৭) সহ ৫-৬ জন মাদক ব্যবসায়ী মাদক আনার উদ্দেশ্যে উপজেলার মানিকপুর সীমান্তের ৭০ নম্বর মেইন পিলারের কাছ দিয়ে ভারতের অভ্রান্তরে প্রবেশ করে। এসময় ভারতের মেটেরিয়া বিএসএফ ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে শহিদুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। অন্যরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
পরের দিন ৩০ নভেম্বর সকালে গয়েশপুর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার তার লাশ ফেরত চেয়ে, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের মেটেরিয়া বিএসএফ ক্যাম্পে চিঠি দেন। সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে এবং মরদেহ দ্রুত ফেরত আনার লক্ষ্যে দুই বাহিনীর মধ্যে ১ সপ্তাহ যোগাযোগ চলতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকালে মরদেহ হস্তান্তর সম্পন্ন হয়।
স্থানীয়দের দাবি, সীমান্তে বারবার এমন গুলি বর্ষণ ও প্রাণহানির ঘটনা গ্রামীণ জনজীবনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) রিপন কুমার দাস বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।