
রংপুরের বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ৪র্থ ব্যাচের ক্যাডেটদের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ (গ্রাজুয়েশন প্যারেড) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ক্যাডেটদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন, সালাম গ্রহণ ও পদক বিতরণ করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) দেলোয়ারা বেগম।
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ৪র্থ ব্যাচের দুই বছর মেয়াদি একাডেমিক ও রেজিমেন্টাল প্রশিক্ষণ শেষে এবছর মোট ৬১ জন ক্যাডেট অফিসার প্রি-সি সনদ অর্জন করেন। এর মধ্যে নটিক্যাল শাখায় ২৮ জন এবং মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় ৩৩ জন ক্যাডেট রয়েছেন।
বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ শেষে প্রধান অতিথি বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী ক্যাডেটদের পদক বিতরণ করেন। ক্যাডেটদের মধ্যে সকল বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য কমান্ড্যান্ট স্বর্ণ পদক গ্রহণ করেন সিনিয়র ক্যাডেট ক্যাপ্টেন জিলহাজুর রহমান অর্ণব।
নটিক্যাল বিভাগের ক্যাডেট ক্যাপ্টেন খন্দকার সাবিতুল ইসলাম এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ক্যাডেট ক্যাপ্টেন ওমর ফারুক সব বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তির জন্য কমান্ড্যান্ট রৌপ্য পদক গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এদেশের মোট বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ সমুদ্র পথে পরিচালিত হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, বর্তমানে প্রশিক্ষিত ক্যাডেটরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমুদ্রগামী জাহাজে পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে।
ক্যাডেটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সমুদ্র সেক্টরে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে হবে। সততা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখতে উপস্থিত ক্যাডেটদের উদ্বুদ্ধ করেন।
মেরিন একাডেমির ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দক্ষ নাবিক তৈরিতে একাডেমির প্রশিক্ষকগণ সমুদ্রবেষ্টিত ১৭৬টি দেশের প্রণীত গাইডলাইন অনুসরণ করে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকেন। ফিলিপাইনের ন্যায় সমুদ্র সেক্টরে সাফল্য অর্জন ও সুদূর অর্থনীতিকে কাজে লাগাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, ক্যাডেটদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদানে নতুন ৪টি মেরিন একাডেমির প্রতিটিতে অত্যাধুনিক সিম্যুলেটর স্থাপনের উদ্যোগ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে।
রংপুর মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট ক্যাপ্টেন মো. সাহেদ সাত্তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, দক্ষ মেরিন অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ার তৈরিতে একাডেমিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি থেকে অর্জিত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণকে কাজে লাগিয়ে তিনি ক্যাডেটদের সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও নৈতিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, ক্যাডেটদের অভিভাবক ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, রংপুরের বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত চার ব্যাচে ২৪১ জন নটিক্যাল ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাডেট প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তারা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন শিপিং কোম্পানি ও মেরিটাইম প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন।