ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মানবতাবিরোধী অপরাধ

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন নাহিদ ইসলাম

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন নাহিদ ইসলাম

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেয়া শুরু করেন।

এর আগে এই মামলার সাক্ষী ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্য পরবর্তী আজকের জেরা শেষ হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে আজ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

গত বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) এ মামলায় ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল মাহমুদুর রহমান ও নাহিদ ইসলামের। তবে ব্যক্তিগত কারণে তারা সেদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পারেননি। এ প্রেক্ষিতে সময় চেয়ে আবেদন করা হলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন।

এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় গত ৩ আগস্ট। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের জবানবন্দি ও জেরা চলমান রয়েছে। এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনাল মোট ৪৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করেছে।

এর মধ্যে, গত ২ সেপ্টেম্বর ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন এ মামলার আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তার জেরা শেষ হয় ৪ সেপ্টেম্বর। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালানো হয়েছে জানিয়ে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। একই সঙ্গে অজানা অনেক তথ্য ট্রাইব্যুনালের সামনে এনেছেন সাবেক এই পুলিশ প্রধান।

সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।

গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ উত্থাপন করেছে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রটি মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে ২,০১৮ পৃষ্ঠা তথ্যসূত্র, ৪,০০৫ পৃষ্ঠা জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি এবং ২,৭২৪ পৃষ্ঠা শহীদদের তালিকার বিবরণ রয়েছে। এ মামলায় সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন মোট ৮১ জন। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চূড়ান্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের দপ্তরে জমা দেয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধ,নাহিদ ইসলাম,সাক্ষ্য,আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল,সাক্ষী,এনসিপি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত