ইনুর বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্যসহ সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

চব্বিশের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন আজ। সেই সঙ্গে প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের কথা রয়েছে।

রোববার (৩০ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে সূচনা বক্তব্যের পর এ সাক্ষ্য পেশ হবে। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন— অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এদিকে, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে রিভিউ করেছেন ইনু। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সো-কলড বলেও আখ্যায়িত করেছেন। তবে তার এমন মন্তব্যকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হিসেবে দেখছে প্রসিকিউশন। একইসঙ্গে ইনুর আবেদনটি বাতিল চাওয়া হয়। এ নিয়ে আজ ট্রাইব্যুনালের আদেশ আসতে পারে।

এর আগে, গত ২ নভেম্বর ইনুর বিরুদ্ধে আনা আটটি অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। এছাড়া সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করা হয়। ওই দিন ৮টি অভিযোগই ইনুকে পড়ে শোনান বিচারক। একপর্যায়ে নিজেকে পুরোপুরি নির্দোষ দাবি করেন ইনু।

গত বছরের ২৬ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে পুলিশ হাসানুল হক ইনুকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন মামলার কারণে কারাগারে আছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন এই জাসদ নেতা। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের প্রার্থী হয়ে কুষ্টিয়ার নিজ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

উল্লেখ্য, জুলাই–আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় কুষ্টিয়া শহরে শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, সুরুজ আলী বাবু, শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুস্তাকিন ও উসামা, ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী এবং চাকরিজীবী ইউসুফ শেখ শহীদ হন। আহত হন বহু নিরীহ মানুষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইনুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। পরবর্তীতে তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। যাচাই–বাছাই শেষে প্রসিকিউশন উসকানি, ষড়যন্ত্রসহ মোট ৮টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দাখিল করে। তার বিরুদ্ধে প্রণীত ফরমাল চার্জটি ৩৯ পৃষ্ঠার, যেখানে ২০ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি প্রমাণ হিসেবে প্রসিকিউশন তিনটি অডিও ও ছয়টি ভিডিও জমা দিয়েছে।