অনলাইন সংস্করণ
১৫:২১, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই সেলে গুম–নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক–বর্তমান সামরিক কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য আগামী ২১ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ এবং সাত আসামির পক্ষে শুনানি করেন তবারক হোসেন। অন্যদিকে পলাতক আসামিদের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম শুনানি করেন। তিনজনের পক্ষে সুজাদ মিয়া এবং শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী মো. আমির হোসেন আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করেন। তারা প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা যুক্তিতে নিজ নিজ মক্কেলের অব্যাহতি চান।
প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আবেদন জানান। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
গত ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। ওই দিন শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিতে টিএফআই সেলে গুমের বীভৎস বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি। গুমের অন্ধকার পেরিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক নতুন বাংলাদেশ উদিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য দুভাবে নির্ধারণ হতো বলে উল্লেখ করেন তাজুল ইসলাম। এর মধ্যে ভাগ্য ভালো হলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হতো। আর দ্বিতীয়ত, সাত-আট বছর গুম রাখার পর অজানা কোনো স্থানে ফেলে রাখা হতো। এছাড়া আরও ভয়াবহ নির্যাতনের কথা সামনে আনেন চিফ প্রসিকিউটর।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর প্রসিকিউশনের শুনানি শেষ হয়। ওই দিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আদালতে টিএফআই সেলে গুম ও নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গুমের অন্ধকার পেরিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক নতুন বাংলাদেশ উদিত হয়েছে।
গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য সাধারণত দুইভাবে নির্ধারিত হতো উল্লেখ করে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এর মধ্যে ভাগ্য ভালো হলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হতো। আর দ্বিতীয়ত, সাত-আট বছর গুম রাখার পর অজানা কোনো স্থানে ফেলে রাখা হতো। আরও ভয়াবহ নির্যাতনের তথ্যও তিনি আদালতে উপস্থাপন করেন।
এদিন সকালে ঢাকার সেনানিবাসে অবস্থিত বিশেষ কারাগার থেকে গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন— র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে); র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
মামলার পলাতক আসামিরা হলেন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।