ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যৌথ অভিযানে নবী হোসেন গ্রুপের ৪ সদস্য আটক

নগদ টাকা ও বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যৌথ অভিযানে নবী হোসেন গ্রুপের ৪ সদস্য আটক

কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কুখ্যাত ডাকাত নবী হোসেন গ্রুপের চার সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে ১৪ লাখ নগদ টাকা ও একটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র (UZI SMG) উদ্ধার করা হয়।

রোববার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী ও এপিবিএন’র সমন্বয়ে পরিচালিত এ অভিযানে ক্যাম্প ১১-এর সি/৬ ব্লকের মাঝি কেফায়েত উল্লাহর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে এসব উদ্ধার করা হয়।

আটককৃত সন্ত্রাসীরা হলেন- ক্যাম্পের ১১ এর ই ব্লকের মো. ইউসুফের ছেলে মো. আনাস (৩০), ক্যাম্প-৯ ব্লক সি ১৪ এর বাসিন্দা নুর বসরের ছেলে মনসুর (৩২), ক্যাম্প ৯ এর সি ব্লক ১৬ এর বাসিন্দা নাজিমুদ্দিনের ছেলে ইয়াসের আরাফাত (৩৫) ও ক্যাম্প-১১এর সি-৬ ব্লকের বাসিন্দা সৈয়দ আহমেদ এর ছেলে কেফায়েত উল্লাহ (৩৫)।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, তারা কুখ্যাত রোহিঙ্গা ডাকাত নবী হোসেনের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী দলের সক্রিয় সদস্য। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যৌথবাহিনী কক্সবাজারস্থ টিমের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা মেজর আরিফ শাহরিয়ার।

জানা যায়, অভিযানের দিন ক্যাম্পে আগত এক অস্ত্র ব্যবসায়ী ইলিয়াসের সঙ্গে বিদেশি অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য ওই চারজন উপস্থিত ছিলো। যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ইলিয়াস পালিয়ে গেলেও বাকিদের আটক করা সম্ভব হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্র UZI SMG, যা সাধারণত মিয়ানমার সেনাবাহিনী ব্যবহার করে। সেটি নবী হোসেনের ক্যাম্প ৮ (ইস্ট) এলাকার আস্তানায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

নবী হোসেন বর্তমানে আরসার কমান্ডার এবং আরসিপিআর এর প্রধান নেতা দিল মোহাম্মদের অধীনে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিগত ২০২৩ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পর অল্প সময়ে তিনি ক্যাম্পের শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

তার বিরুদ্ধে বহুবার ইয়াবা ও অস্ত্র চোরাচালানের অভিযোগ উঠলেও প্রভাবশালী গোষ্ঠীর আশ্রয়ে থাকায় এতদিন গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হয়েছেন। বর্তমানে সে আইন ভঙ্গ করে ক্যাম্প ৮ (ইস্ট)-এ একটি ৬০ ফুট দীর্ঘ ও ২০ ফুট প্রস্থের পাকা স্থায়ী ঘর নির্মাণ করেছে। যা রীতিমতো একটি দুর্গে পরিণত হয়েছে।

এদিকে, ক্যাম্পের ভেতর দিন দিন সন্ত্রাসী তৎপরতা, অস্ত্রের মহড়া ও চাঁদাবাজি বেড়ে চলেছে। সাধারণ রোহিঙ্গা জনগণ একপ্রকার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, এই সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক এখনই দমন করা না গেলে, ক্যাম্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়তে পারে।

সচেতন মহলের দাবি, ক্যাম্পে অবস্থানরত অস্ত্রধারী ও চিহ্নিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সময় এসেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়মিত অভিযান এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প,যৌথ অভিযান,আটক
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত