
চট্টগ্রামে হাটহাজারীতে সম্প্রতি ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হত্যার নেপথ্যের কারণ উদঘাটন করেছে পুলিশ। বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিমকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (১০ নভেম্বর) হাকিম হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয় চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু।
এর আগে রোববার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাকিম হত্যা মামলার মূলহোতা সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গোলাবরূদ। এ নিয়ে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- মো. আব্দুল্লাহ খোকন প্রকাশ লেংড়া খোকন, মো. মারুফ, জিয়াউর রহমান, মো. সাকলাইন হোসেন, মো. সাকিব, শাহেদ।
গত ৭ অক্টোবর মদুনাঘাট এলাকায় বিকেলে খুন হয় আব্দুল হাকিম। ঘটনার দিন সকালে নিহত হাকিম নিজ প্রাইভেট কারে করে হামিম এগ্রো ফার্মে যান। বিকেলে চট্টগ্রাম শহরে ফেরার পথে মদুনাঘাট ব্রিজের পশ্চিম পাশে পৌঁছালে মোটরসাইকেল যোগে আসা সন্ত্রাসীরা তার গাড়ির সামনে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি মারা যান। সাইফুল ইসলাম সানতু আরও জানান, গ্রেপ্তার তিন জনকে পুলিশ রিমান্ডে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৯ নভেম্বর একই এলাকার আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হাকিম হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ৪টি বিদেশি পিস্তল, ১টি রিভলভার, ১ টি চায়না রাইফেল, ১ টি শট গান, ৪৯ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ১৭ রাউন্ড শটগানের কার্তুজ, ১৯ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৭টি ম্যাগজিন, ২টি দেশীয় রামদা, ১টি রকেট ফ্লেয়ার, ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২৫০ গ্রাম গাঁজা এবং ৯৬ হাজার নগদ টাকাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি। ঘটনার পর জেলা গোয়েন্দা শাখা ও হাটহাজারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্য ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৩১ অক্টোবর রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের গরীব উল্লাহ পাড়া এলাকা থেকে মো. আব্দুল্লাহ খোকন প্রকাশ ল্যাংড়া খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে এবং পরবর্তীতে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। খোকনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ২ নভেম্বর রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. মারুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। মারুফের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের অবস্থান জানা যায়। যা মো. সাকলাইন হোসেনের হেফাজতে ছিল। পরবর্তীতে ৪ নভেম্বর রাতে হাটহাজারী থানার একটি বিশেষ টিম রাউজানের নোয়াপাড়ায় অভিযান চালিয়ে সাকলাইনকে গ্রেপ্তার করে। তার হেফাজত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।