ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) অন্তত চারটি ক্যাম্পে ভারতীয় সেনাবাহিনী হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। উলফার দাবি, রবিবার (১৩ জুলাই) সকালে তাদের ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালানো হয়। এ হামলায় অন্তত ১০০টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার চারটি ক্যাম্পকে নিশানা করে ভারতীয় সেনাবাহিনী ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে উলফা-আই। মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এসব ঘাঁটি লক্ষ্য করে ভারতীয় সেনাবাহিনী শক্তিশালী অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে শতাধিক ড্রোন ব্যবহার করে নিষিদ্ধ ঘোষিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একাধিক ঘাঁটিতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উলফা-আই অভিযোগ করেছে, সীমান্ত অতিক্রম করে চালানো এই হামলায় অন্তত ১৯ জন উলফা সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৯ জন। নিহতদের মধ্যে সংগঠনটির শীর্ষ সামরিক নেতা লেফটেন্যান্ট জেনারেল নয়ন অসমও রয়েছেন বলে দাবি করেছে উলফা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নয়ন মেধি নামেও পরিচিত এই কমান্ডার হামলায় নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি মণিপুরের বিদ্রোহী সংগঠন পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) রাজনৈতিক শাখা রেভল্যুশনারি পিপলস ফ্রন্টের (আরপিএফ) কয়েকজন সদস্যও হতাহত হয়েছেন বলে খবর দিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।
তবে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই অভিযোগ স্পষ্টভাবে অস্বীকার করা হয়েছে। ভারতীয় বার্তা সংস্থা আইএএনএস-কে প্রতিরক্ষা বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহেন্দ্র রাওয়াত বলেছেন, এ ধরনের কোনো অভিযানের তথ্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে নেই। এনডিটিভির প্রতিবেদনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই অবস্থানও পুনরায় উল্লেখ করা হয়েছে।
আইএএনএসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উলফা-আই-এর নেতৃত্বে এখন কেবল একজন শীর্ষ নেতা অরুণোদয় দোহতিয়া রয়েছেন, যিনি মিয়ানমারে অবস্থান করছেন। এর আগে, মিয়ানমারে উলফা-আই-এর ঘাঁটি থেকে পরিচালিত কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন রূপম অসম নামের আরেক নেতা, যিনি ২০২৫ সালের মে মাসে আসাম পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হন।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার বর্তমানে তাতমাদাও সেনাবাহিনীর শাসনে রয়েছে এবং দেশটির ভেতরে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত বরাবর এই বিদ্রোহী সংগঠনগুলো একাধিকবার ঘাঁটি গড়ে তুলেছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মে মাসেই মণিপুরের চান্ডেল জেলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন সশস্ত্র বিদ্রোহী নিহত হয়েছিলেন। সীমান্তবর্তী অঞ্চলের এই লড়াই ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।