অনলাইন সংস্করণ
১৪:২০, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
ব্রিটেনে নারীরা এখনও প্রকাশ্য রাস্তায় নিরাপদ বোধ করছেন না। ২০২১ সালের মার্চে লন্ডন পুলিশের এক কর্মকর্তা ওয়েন কাজেন্স সারা এভারার্ড নামে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যা করলে গোটা দেশ স্তম্ভিত হয়েছিল। সেই ঘটনায় রাস্তায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়।
কিন্তু চার বছর পার হয়ে গেলেও পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। সারা এভারার্ড হত্যাকাণ্ডের তদন্তকারী দলের প্রধান, স্কটল্যান্ডের আইনজ্ঞ এলিশ অ্যাঞ্জিওলিনি সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছেন, “ব্রিটেনে নারী-শিকারীরা এখনও খোলাখুলি ঘুরে বেড়াচ্ছে। মেয়েরা ও নারীরা প্রকাশ্য রাস্তায় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন।”
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ঘটনার পর থেকে অসংখ্য নারী নানা ধরনের হামলার শিকার হয়েছেন। প্রতিবেদনে ‘প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহে মৌলিক ব্যর্থতা এবং মেয়েদের বিরুদ্ধে হামলা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টি’ বিশেষভাবে হাইলাইট করা হয়েছে।
অ্যানজিওলিনির রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ব্রিটেনে প্রকাশ্য স্থানে নারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই। এটি নিরাপত্তা নীতি ও পরিকল্পনায় বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের অনেক নারী—ছাত্রী, কর্মজীবী ও পুলিশকর্মী—পাবলিক জায়গায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে সর্বদা সতর্ক থাকেন। নারীদের কাছে রাস্তা বা পাবলিক জায়গায় হয়রানি এতটাই সাধারণ হয়ে গেছে যে, তারা সাধারণত কেবল বড় ধরনের ঘটনারই রিপোর্ট দেন।
জাতিসংঘের সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, ব্রিটেনে ৭১ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, তাদের জীবনে অন্তত একবার পাবলিক জায়গায় যৌন হয়রানি বা হিংসার শিকার হতে হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ব্রিটেনের পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যৌন হিংসার একাধিক মামলার পুনরাবৃত্তি দেখা গেছে, যা নারীর বিরুদ্ধে হয়রানির সুযোগ তৈরি করছে।
এদিকে, ব্রিটেনের কয়েকজন নারী সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, বাইরে বের হলে তারা সহজে দৌড়াতে পারে এমন জুতো পরেন এবং সবসময় ফোনে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেন যাতে নিরাপদ বোধ হয়।
সামাজিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ব্রিটেনে নারী বিরোধী অপরাধ প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় পুলিশ ও বিচার বিভাগীয় কাঠামোতে গুরুতর ও দীর্ঘস্থায়ী দুর্বলতা রয়েছে।