
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডায় নিজের মার-এ-লাগো রিসোর্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে স্বাগত জানানোর সময় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। সূত্র: আল জাজিরা।
আলোচনায় বসার আগে মার-এ-লাগো রিসোর্টের বাইরে দাঁড়িয়ে দুই নেতা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রায় চার বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসানে নতুন একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতেই এই বৈঠক।
ট্রাম্প বলেন, আমার মনে হয় আমরা আলোচনার একেবারে শেষ পর্যায়ে আছি। এখন দেখার বিষয় কী হয়। নইলে এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘ হবে এবং আরো লাখো মানুষ মারা যাবে।
তবে তিনি আলোচনার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করেননি।
ট্রাম্প বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এমন একটি চুক্তির ভিত্তি তৈরি হয়েছে, যা ইউক্রেনের জন্য ভালো, সবার জন্য ভালো।
তিনি জানান, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি ‘শক্তিশালী চুক্তি’ হবে, যেখানে ইউরোপীয় দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের হাতে দুটি আগ্রহী পক্ষ আছে। দুটি দেশই চায় যুদ্ধ শেষ হোক। ইউক্রেনের জনগণ যুদ্ধের অবসান চায়, রাশিয়ার জনগণও চায়, আর দুই দেশের নেতারাও চান।
এদিকে ফ্লোরিডায় বৈঠকের আগের কয়েক দিনে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে হামলা জোরদার করে রাশিয়া।
ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, বৈঠকে আঞ্চলিক ছাড় নিয়ে আলোচনা হবে, যা এতদিন ইউক্রেনের জন্য ছিল ‘রেড লাইন’। তিনি জানান, তার আলোচক দল ও ট্রাম্পের উপদেষ্টারা ‘ধাপে ধাপে কীভাবে শান্তির পথে এগোনো যায়’ তা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং রোববারের বৈঠকেও তা চলবে।
সাম্প্রতিক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর মতো কিছু নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। জেলেনস্কি জানান, ভবিষ্যতে রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে ন্যাটো-সদৃশ নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পেলে ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আবেদন প্রত্যাহার করতেও প্রস্তুত।
তবে এসব আলোচনা নিয়ে ইউক্রেনের জনগণের মধ্যে গভীর সন্দেহ রয়েছে বলে মনে করেন ইউক্রেনিয়ান প্রিজম থিঙ্কট্যাংকের বিশ্লেষক ওলেকসান্দ্র ক্রাইয়েভ।
আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালেও আমরা এমন চেষ্টা করেছি। প্রতিবারই রাশিয়া যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে। শান্তি প্রক্রিয়ার কথা তো বাদই দিলাম।
তিনি আরো বলেন, আমরা শান্তিচুক্তির ওপর খুব বেশি আস্থা রাখছি না। আপাতত যুদ্ধবিরতিকে আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে দেখছি। রাশিয়ার ওপর বিশ্বাস করা যায় না, তবে যুদ্ধবিরতি সম্ভব-সেই লক্ষ্যেই কাজ চলছে।
আবা/এসআর/২৫