অনলাইন সংস্করণ
১০:৩০, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
শিরক করা : আল্লাহতায়ালা তাঁর সঙ্গে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে অংশীদার সাব্যস্ত করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহর অধিকারসংক্রান্ত সব গোনাহ তিনি মাফ করবেন; কিন্তু শিরকের গোনাহ কখনও মাফ করবেন না। আল্লাহ কোরআনে বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সঙ্গে শরিক তথা অংশীদার সাব্যস্ত করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্নপর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন আল্লাহকে অপবাদ দিল।’ (সুরা নিসা : ৪৮)।
মাপে কম দেওয়া : ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেনের ক্ষেত্রে ওজনে কম দেওয়া জঘন্যতম পাপ। এর ভয়াবহতা সম্পর্কে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘দুর্ভোগ ঠকবাজদের জন্য (যারা মাপে বা ওজনে কম দেয়), যারা লোকের কাছ থেকে মেপে নেওয়ার সময় পুরো মাত্রায় নেয়, আর যখন তাদের মেপে দেয় বা ওজন করে দেয় তখন কম দেয়।’ (সুরা মুতাফফিফিন : ১-৩)।
জাকাত না দেওয়া : জাকাত আদায়ে বিত্তবানদের সম্পদ যেমন পবিত্র হয়, তেমনি সমাজে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য দূর হয়। যারা জাকাত বর্জন করে তারা নিকৃষ্ট ও কঠিন শাস্তিযোগ্য কাজে নিপতিত হয়। আল্লাহ বলেন, ‘যারা সোনা-রুপা পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদের যন্ত্রণাময় শাস্তির সুসংবাদ দাও।’ (সুরা তওবা : ৩৪)।
মদপান : ইসলামে মদপান ও মদ বিক্রি হারাম। আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া আর মূর্তি ও ভাগ্য নির্ধারক তির ঘৃণিত শয়তানি কাজ, তোমরা তা বর্জন করো, যাতে তোমরা সাফল্যমণ্ডিত হতে পারো।’ (সুরা মায়েদা : ৯০)।
সুদ খাওয়া : ইসলামে সুদ হারাম। সুদের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে ভয়াবহ শাস্তির সম্মুখীন হবে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা সুদ খায়, কেয়ামতের দিন তারা সেই ব্যক্তির মতো উঠবে, শয়তান যাকে স্পর্শ করে পাগল বানিয়ে দিয়েছে। এটা এজন্য হবে যে, তারা বলেছিল, ব্যবসাও তো সুদের মতো।’ (সুরা বাকারা : ২৭৫-২৭৬)।
ব্যভিচার : ব্যভিচার ইসলামে নিন্দনীয় ও হারাম কাজ। আল্লাহ বলেন, ‘আর জেনা-ব্যভিচারের কাছেও যেও না, তা হচ্ছে অশ্লীল কাজ আর অতি জঘন্য পথ।’ (বনি ইসরাইল : ৩২)।
অঙ্গীকার ভঙ্গ করা : সত্যিকারের মুমিনের গুণ হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে করা অঙ্গীকার রক্ষা করা। আল্লাহ বলেন, ‘আর যারা আল্লাহর সঙ্গে শক্ত ওয়াদা করার পর তা ভঙ্গ করে, আল্লাহ যা বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তা ছিন্ন করে, আর জমিনে অশান্তি সৃষ্টি করে—তাদের প্রতি অভিশাপ, তাদের জন্য আছে মন্দ আবাসস্থল।’ (সুরা রাদ : ২৫)।
সম্পদ আত্মসাৎ : বিশেষ করে এতিমের সম্পদ আত্মসাৎকারীদের ব্যাপারে কঠিন শাস্তির কথা এসেছে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা এতিমের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করে, তারা নিজেদের পেটে শুধু আগুন ভরে। তারা অচিরেই এক জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করবে।’ (সুরা নিসা : ১০)।
মা-বাবার অবাধ্যতা : মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণ করা মুমিনের কর্তব্য। তাদের অবাধ্যতা করা ইসলামে নিকৃষ্ট কাজ। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমার প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করো না, বাবা-মার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো। বাবা-মার কোনো একজন কিংবা উভয়ে যদি বার্ধক্যে উপনীত হন, তবে তাদের উফ পর্যন্ত বলো না এবং তাদের ধমক দিও না; বরং তাদের সঙ্গে সম্মানজনক কথা বলো।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ২৩)।
মুনাফিকি করা : মুনাফিকি ইসলামে মারাত্মক রোগ ও নিকৃষ্ট কাজ। ভেতরের অবস্থা প্রকাশ্যের বিপরীত হলে তাকে মুনাফিক বলা হয়। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্থানে অবস্থান করবে।’ (সুরা নিসা : ১৪৫)।
✍️ লেখক: আলেম ও মাদ্রাসা শিক্ষক