অনলাইন সংস্করণ
১৩:১৫, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
শীতকাল এলেই ঘরে ঘরে মুখরোচক খাবারের আয়োজন শুরু হয়। পিঠা-পুলি থেকে শুরু করে নানান ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন—সবখানেই অন্যতম প্রধান উপকরণ খেজুর গুড়। প্রাকৃতিক মিষ্টতা ও অনন্য স্বাদের কারণে এই গুড় শীতের খাদ্যতালিকায় বিশেষ স্থান দখল করে আছে। শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর খেজুর গুড়। এটি শরীরকে উষ্ণ রাখার পাশাপাশি শক্তি জোগায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। যারা পরিশোধিত চিনির স্বাস্থ্যকর বিকল্প খুঁজছেন, তাদের জন্য খেজুর গুড় হতে পারে আদর্শ পছন্দ। শীতকালে নিয়মিত খেজুর গুড় খেলে শরীরে যে উপকারগুলো দেখা যায়, তা নিচে তুলে ধরা হলো—
১. শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করে
খেজুর গুড় প্রাকৃতিক শর্করা ও কার্বোহাইড্রেটের ভালো উৎস। এটি দ্রুত শক্তি জোগালেও রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়িয়ে দেয় না। জার্নাল অফ ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি–তে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, গুড়ে থাকা জটিল শর্করা ধীরে ধীরে শক্তি ছাড়ে, ফলে দীর্ঘ সময় শরীর সক্রিয় থাকে।
২. হজমশক্তি উন্নত করে
খেজুর গুড় হজমকারী এনজাইমকে সক্রিয় করে, যা খাবার সহজে হজমে সাহায্য করে। এতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে কার্যকর—যা শীতকালে চলাফেরা কমে যাওয়ার কারণে বেশি দেখা যায়। পাশাপাশি এটি অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে এবং পেট ফাঁপা ও বদহজমের ঝুঁকি কমায়।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজে সমৃদ্ধ খেজুর গুড় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে। আয়রন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখে, আর ম্যাগনেসিয়াম সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে। নিউট্রিশন রিভিউ–এর গবেষণায় খনিজসমৃদ্ধ খাবারকে মৌসুমি অসুখ প্রতিরোধে কার্যকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
৪. শরীর উষ্ণ রাখে
শীতকালে গুড় খাওয়ার প্রচলন বহু পুরোনো। খেজুর গুড়ের থার্মোজেনিক গুণ শরীরে তাপ উৎপন্ন করে, যা ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরকে উষ্ণ ও আরামদায়ক রাখে। তিল বা চিনাবাদামের সঙ্গে খেজুর গুড় খেলে উপকার আরও বাড়ে।
৫. শরীরকে বিষমুক্ত করতে সহায়তা করে
খেজুর গুড় প্রাকৃতিক ডিটক্স হিসেবে কাজ করে। এটি লিভার ও অন্ত্র থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে শরীর পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব কমায়, ফলে ত্বক সুস্থ থাকে, বিপাকক্রিয়া বাড়ে এবং শরীর আরও সতেজ অনুভব করে।