ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের উপর তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের হামলা

সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের উপর তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের হামলা

সরকারি তিতুমীর কলেজে ছাত্রদল এবং ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষের সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক তাওসিফ মাইমুন এবং বর্তমান সদস্যদের উপর হামলা করে ছাত্রদল। এ বিষয়ে বনানী থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

শনিবার (২২ নভেম্বর) রাত ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে কলেজ ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে এই হামলা হয়।

জানা যায়, শনিবার (২৪–২৫) সেশনের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে কলেজের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার টানে শাখা ছাত্রশিবির। শিবিরের অভিযোগ, তাদের টানানো ব্যানার ছাত্রদল ছিঁড়ে ফেলে।

এই ঘটনায় পুনরায় ব্যানার টানাতে ক্যাম্পাসে যায় শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় পেশাগত দায়িত্ব পালনে হামলার শিকার তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও ডেইলি ক্যাম্পাসের কলেজ প্রতিনিধি মো. আল আমিনকে রক্ষা করতে গিয়ে সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের রিপোর্টার তাওসিফ মাইমুন হামলার শিকার হন।

এসময় সাংবাদিক সমিতির সহযোগী সদস্য মো. সাদিকুল ইসলামকে মারধর করে কলেজ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হামলায় আহত সাংবাদিকরা জানান, সাংবাদিকদের উপর হামলায় জড়িতরা কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন, সদস্য সচিব সেলিম রেজা ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফ মোল্লার অনুসারী।

হামলার নেতৃত্ব দেন হারুন আর রশিদ, আতিক জলিল, মো. আল-আমিন, মামুন হলের সভাপতি আফ্রিদি, রকনুজ্জামান, রাকিব, নূরুল আমিন, মেহেদী হাসান ম্যাক্স, আলিফ, আবিদ হোসেন নাইমসহ আরও ২৫–৩০ জন।

সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি তাওসিফ মাইমুন বলেন, “সংঘর্ষের সময় সংবাদ সংগ্রহের জন্য আমি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা হঠাৎ করেই আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এরপর তারা সমিতির অন্যান্য সদস্যদের ওপরও হামলা শুরু করলে তাদের রক্ষা করতে এগিয়ে যাই। তখনই আমার মাথায় লাঠি দিয়ে জোরালো আঘাত করা হয় এবং আমাকে বেধড়ক মারধর করা হয়।”

তিনি আরও বলেন, “পরে কলেজের ছাত্রী নিবাসের গেটের সামনে থেকে আমাকে টেনে-হিঁচড়ে ক্যাম্পাসের মাঠে নিয়ে গিয়ে আবারও মারধর করা হয়। ওই সময় তারা আমার মানিব্যাগ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়।”

সাংবাদিক সমিতির সদস্য মো. আল আমিন বলেন, “সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করে—‘সাংবাদিকতা করছিস? সাংবাদিকতা বন্ধ করে দেবো।’ এরপর তারা আমাকে মারধর শুরু করে। আমি দৌড়ে কলেজ মাঠের দিকে গেলে সেখানেও তারা লাঠি দিয়ে আমার পায়ে আঘাত করে।”

মো. সাদিকুল ইসলাম বলেন, “আজ ছাত্রদল–ছাত্রশিবিরের মারামারির ভিডিও ধারণ করতে গেলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আমার ফোন কেড়ে নেয়। এরপর আনুমানিক ২০ জন আমাকে অন্ধকারে নিয়ে যায়। সেখানে তারা লাঠি দিয়ে ইচ্ছেমতো মারধর করে এবং আমার ফোনের ভিডিওগুলো মুছে দেয়।”

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন বলেন, “শিবিরের পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। শিবির–ছাত্রদলের তর্কাতর্কির মধ্যে তাওসিফ শিবিরের সাপোর্ট নিয়েছে। আমি এখনো বিস্তারিত জানতে পারিনি। কোন কোরামের পোলাপান ছিল তাও জানি না।”

এই বিষয়ে কথা বলার জন্য ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ছাত্রদলের হামলা,তিতুমীর কলেজ,সংবাদ সংগ্রহের সময়
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত