অনলাইন সংস্করণ
১৯:৫১, ২৯ জুলাই, ২০২৫
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘গত বছরের জুলাই-আগস্টের অন্ধকার সময়ে জাতিসংঘ বাংলাদেশের পাশে ছিল—সেই সহায়তা ও সংহতির জন্য আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘ আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লব ও অনুসন্ধান প্রতিবেদন’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গত বছরের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ- বিশেষত তরুণরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে নিজেদের মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ পুনরুদ্ধার করেছিল। তাদের সাহস শুধু বাংলাদেশের পক্ষেই নয়, গোটা মানবতার পক্ষেও কথা বলেছে।’
তিনি জানান, জাতিসংঘ হাইকমিশনারের তদন্ত প্রতিবেদনে গত বছরের ঘটনায় আনুমানিক ১,৪০০ মানুষের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়। ওই সহিংসতা ছিল পূর্বপরিকল্পিত, সুসংগঠিত এবং শাসনক্ষমতার শীর্ষ পর্যায় থেকে পরিচালিত—যা মানবতাবিরোধী অপরাধের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
তিনি আরও জানান, সরকার গঠনের পরপরই মানবাধিকার রক্ষায় ব্যাপক সংস্কার শুরু হয়েছে। সংশোধন করা হয়েছে ফৌজদারি কার্যবিধি, স্বাক্ষর করা হয়েছে আন্তর্জাতিক কনভেনশন, এবং ঢাকায় জাতিসংঘের সহায়ক মিশন স্থাপনের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটি এমন রাষ্ট্র গঠন, যেখানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আর কখনও জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার হবে না। ন্যায়বিচার শুধু শাস্তি নয়, এটি একটি নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া।’
তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক, জাতিসংঘ প্রতিনিধি গোয়েন লুইস এবং অনুসন্ধান মিশনের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে তিনি বলেন, ‘এক বছর পর ফিরে তাকালে আমরা স্মরণ করি তাদের, যারা জীবন দিয়েছেন নতুন বাংলাদেশের জন্য। তারা সৃষ্টি করেছেন আশাভিত্তিক, মানবাধিকারের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এক নবজাগ্রত জাতি।’