ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

এনসিপি-গণঅধিকার পরিষদ এক হওয়ার গুঞ্জন

এনসিপি-গণঅধিকার পরিষদ এক হওয়ার গুঞ্জন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ময়দানে শুরু হয়েছে নতুন সমীকরণের খেলা। নির্বাচনী মাঠে সুবিধাজনক অবস্থান নিশ্চিত করতে বড় জোটের পাশাপাশি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গঠনের আলোচনা চলেছে পর্দার আড়ালে। এরই মাঝে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে— একীভূত হতে যাচ্ছে তরুণদের নেতৃত্বাধীন দুই রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদ।

রাজনৈতিক মহলে অনেকেই মনে করছেন, একীভূত হলে এই জোট তরুণ ভোটারদের বড় একটি অংশকে আকৃষ্ট করতে পারে এবং জাতীয় নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠা এই দুই দলের সাংগঠনিক ভিত্তি ও আদর্শগত দিক অনেকটাই মিল রয়েছে।

আলোচনার শুরু কীভাবে?

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর আহত হলে তাকে হাসপাতালে দেখতে যান এনসিপির শীর্ষ নেতারা। সেখান থেকেই শুরু হয় অনানুষ্ঠানিক আলোচনার সূত্রপাত। এরপর থেকে দুই দলের মধ্যে যোগাযোগ বেড়েছে এবং সম্ভাব্য একীভূত হওয়া নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যেও আলোচনা শুরু হয়েছে।

এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদ—দুই দলই এখন পর্যন্ত একীভূত হওয়ার বিষয়টি ‘আলোচনার পর্যায়ে’ বলেই উল্লেখ করছে। এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, এখনো এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। এ নিয়ে আলোচনা বা প্রস্তাবও আসেনি। তবে যৌক্তিক দাবিতে একসঙ্গে কাজ করার চিন্তা রয়েছে।

অন্যদিকে, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, রাজনীতিতে আলোচনা সব সময়ই চলে। এখনো একীভূত হওয়ার মতো আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক হয়নি। তবে বোঝাপড়ার জায়গা আছে।

গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, আলোচনা তো অনেক কিছুই হচ্ছে। এমন কোনো কিছু ঘটলে সবাই জানবে। আমরা তারুণ্যের শক্তিগুলো এক করার চেষ্টা করছি।

একই সুর এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন-এর কণ্ঠেও। তিনি বলেন, আমরা একটা মধ্যপন্থি রাজনীতির প্ল্যাটফর্ম গড়তে চাই। যে কেউ যদি সেই চিন্তায় একাত্মতা প্রকাশ করে, আমরা তাদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়তে চাই।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির এক শীর্ষ নেতা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গণঅধিকার পরিষদ এনসিপিতে যোগ দিতে চায়—এমন আলোচনা আমাদের মধ্যে হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি

উল্লেখ্য, গণঅধিকার পরিষদ গঠিত হয়েছে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে তৈরি হওয়া সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদকে ঘিরে। এই দল ২০২৩ সালে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক নিবন্ধনও পায়।

অন্যদিকে, এনসিপি গঠিত হয়েছে ২০২৪ সালের কোটা আন্দোলনের সময় গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের দ্বারা। যদিও দলটি এখনো নিবন্ধন পায়নি, তবু রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেদের জায়গা তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশেষ করে, এনসিপির অনেক নেতা আগে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন ছাত্র অধিকার সংগঠনে যুক্ত ছিলেন। এ কারণে দুই দলের মধ্যে আদর্শিক ও নেতৃত্ব পর্যায়ে কিছুটা সম্পর্ক আগে থেকেই রয়েছে।

এনসিপি,গণঅধিকার,গুঞ্জন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত