অনলাইন সংস্করণ
১৪:৫৯, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ স্বাক্ষরকে ‘কেবলই আনুষ্ঠানিকতা’ বলে অভিহিত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, যদি এর কোনো আইনি ভিত্তি তৈরি না হয় এটির আনুষ্ঠানিকতাও থাকবে না, এটি একটি গণ-প্রতারণা এবং জাতির সঙ্গে প্রহসন হবে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ দলের অন্যান্য সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, এটা আমরা আগেও বলেছি, আজও পুনর্ব্যক্ত করছি যদি জুলাই সনদের কোনো আইনি ভিত্তি না হয়, এর কোনো অর্থ তৈরি হবে না। ফলে আমরা এই আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিইনি। আইনি ভিত্তি ছাড়া এটি হবে একটি গণপ্রতারণা এবং জাতির সঙ্গে প্রহসন।
এনসিপি’র আহ্বায়ক বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে এই অভিজ্ঞতা আমরা দেখেছি, ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের পরেও তিন দলের জোটের রূপরেখা আপনাদের মনে আছে, সেই রাজনৈতিক সমঝোতা কিন্তু রক্ষা করা হয়নি। ফলে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে যে দলগুলো আমাদের সঙ্গে ছিলেন এটা তাদের প্রতি বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্ন নয় বরং সংবিধানের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে যদি আমরা পরিবর্তন করতে চাই তার অবশ্যই একটি আইনি ভিত্তি প্রয়োজন।
তিনি অভিযোগ করেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান অপরিবর্তিত রাখার নামে পুরোনো ফ্যাসিস্ট কাঠামো টিকিয়ে রাখার জন্য দেশি-বিদেশি নানা মহল থেকে অপচেষ্টা চলছে। বিগত ফ্যাসিস্ট কাঠামোর সুবিধাভোগীদের চাপের কারণে কিছু রাজনৈতিক দল আপস করেছে। ফ্যাসিস্ট কাঠামো অক্ষুণ্ন রাখতে নানা কৌশল চলছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপি এবং আরও কিছু রাজনৈতিক দল ও অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া ছাত্র-জনতার চাপেই সরকার এই ঐকমত্য কমিশন গঠন, সংস্কার প্রক্রিয়া এবং জুলাই সনদ পর্যন্ত এসেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের লড়াই শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নয়, বরং একটি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। শুধু নেতৃত্ব পরিবর্তন নয়, কাঠামোগত সংস্কারই গণতন্ত্রের সমাধান। ৯০-এর মতো জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে আবার বিক্রি করতে দেয়া হবে না।
গতকাল (শুক্রবার) জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের প্রসঙ্গে এনসিপি’র আহ্বায়ক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহিদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের প্রতি অবমাননা করা হয়েছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি ওই অনুষ্ঠানে।
তিনি বলেন, এটি (জুলাই সনদ) তখনই অর্থবহ হবে, যখন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস (প্রধান উপদেষ্টা) একটি আদেশ জারি করে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেবেন। এরপর গণভোট ও গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে।
প্রতীক ইস্যুতে নাহিদ ইসলাম বলেন, শাপলাই হবে এনসিপির মার্কা এই মার্কা নিয়েই তার দল আগামী জাতীয় নির্বাচনে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ঐকমত্য কমিশনে আমরা জোরালো ভূমিকা রেখেছি। কিন্তু অনেক রাজনৈতিক দল এখনো এটিকে কেবল রাজনৈতিক সমঝোতা বা জেন্টেলম্যান অ্যাগ্রিমেন্ট হিসেবেই রাখতে চায়।