ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

নারায়ণগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা সম্পন্ন, ডিসির ভূমিকা প্রশংসিত

নারায়ণগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা সম্পন্ন, ডিসির ভূমিকা প্রশংসিত

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা নারায়ণগঞ্জে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে পূজা শুরু হওয়ার আগেই নিরাপত্তাসহ সার্বিক প্রস্তুতি দেখতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার একাধিক পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নজর কাড়েন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা জেলা প্রশাসকের এই কার্যক্রমকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন। তাদের দাবি, পূজার প্রস্তুতি সরেজমিন দেখতে কোনো জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগ তারা আগে দেখেননি। সরেজমিনে দেখা গেছে, পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরুর দিন থেকেই ডিসি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞাকে দেখা গেছে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পূজামণ্ডপে। শুরুর প্রথম দিনেই জেলা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের আতলাপুর বাজার মহাশ্মশান কালীবাড়ি পূজামণ্ডপে তার উপস্থিতিতে উচ্ছ্বসিত হন ভক্তরা। জেলার সীমান্তবর্তী এই মণ্ডপের একপাশে গাজীপুরের কালীগঞ্জ, অন্যপাশে নরসিংদীর পলাশ উপজেলা এ কারণে নারায়ণগঞ্জ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সচরাচর সেখানে যান না। পরদিন সপ্তমীতে তিনি উপস্থিত হন বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়নের চর শ্রীরামপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদীর ধারে অবস্থিত শ্রীশ্রী ব্রহ্মা মন্দিরে। পাকিস্তান আমলে নির্মিত হলেও এই মন্দিরে এর আগে কোনো জেলা প্রশাসক যাননি। এলাকাটি চরাঞ্চল এবং তুলনামূলকভাবে কম জনবসতিপূর্ণ হওয়ায় এর গুরুত্ব সাধারণত কম ধরা হয়। কখনও কখনও তার সঙ্গে ছিলেন জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনও। শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব শেষ হওয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার ভূয়সী প্রশংসা করছেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলার নিতাইগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শংকর সাহা বলেন, উৎসবমুখরভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা পালনে জেলা প্রশাসকের প্রচেষ্টা ছিল নজিরবিহীন। উনার মতো জেলা প্রশাসক যারা পেয়েছেন, তারা আসলেই ভাগ্যবান। উনি মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দুর্গাপূজায় যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, আমার মনে হয় আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলাতেই সেটা সবচেয়ে বেশি বাস্তবায়িত হয়েছে। জেলা প্রশাসক মানুষে মানুষে বৈষম্য দূর করা এবং আন্তঃধর্ম সহাবস্থান নিশ্চিত করতে উনি খুবই আন্তরিক। সর্বশেষ বিসর্জনের আগ পর্যন্ত প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিসর্জনস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করেছেন। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি শংকর দে বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা সুন্দরভাবে আয়োজনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের ভূমিকা অত্যন্ত চমৎকার ছিল। জেলা প্রশাসক আমাদের অনুরোধে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য এবার নতুন করে ৫ নম্বর ঘাটে ব্যবস্থা করেছেন। আগে তিন নম্বর ঘাটে বিসর্জনের জন্য জেটি ছিল ১০০ ফুট। এবার আড়াইশো ফুট লম্বা করা হয়েছিল এই জেটি। এখানে মোট ৪৩টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। বিসর্জন স্থলে জেলা প্রশাসন একটি বিশাল মঞ্চও তৈরি করেছিল। প্রতিমা বিসর্জনের সময়ও পুলিশ, সেনাবাহিনী, আনসার, বিজিবি, র‌্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস এবং বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করেন। ফলে প্রতিমা বিসর্জনও পরিণত হয় এক মিলনমেলার আবহে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত