
ময়মনসিংহের ফুলপুরে ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি রাস্তা না থাকায় সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারছে না। অভাবে এক বছর ধরে পড়ে আছে।
উপজেলার ভাইটকান্দি ইউনিয়নের সুতারকান্দি ও ছোট চিলাগাই গ্রামের মধ্যবর্তী খড়িয়া নদীর ওপর ৯ কোটি ৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মিত হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় জনগণের কোনো কাজেই আসছে না। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সেতু নির্মিত হওয়ার মাধ্যমে জনসাধারণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটলেও সংযোগ অভাবে সেতুটি ব্যবহারযোগ্য না হওয়াটা সেতু নির্মাণের সার্থকতাকে যেন উপহাস করছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মাধ্যমে প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুর্যাল ব্রিজেস প্রকল্পের আওতায় ৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে এই সেতুটির নির্মাণকাজ ২০২৩ সনের মে মাসে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবরে শেষ হয়। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলেও এ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় কোনো যাহবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেও জনসাধারণের চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। সমতল ভূমি হতে সেতুর পাটাতন প্রায় ১০ ফুট ওপরে থাকায় স্থানীয় লোকজন কিছু মাটির বস্তা ফেলে কোনো রকমে সেতু দিয়ে চলার চেষ্টা করছেন। কোনো বৃদ্ধ বা অসুস্থ মানুষের পক্ষে এইসেতু দিয়ে পারাপার করা সম্ভব নয়। সংযোগ সড়কের অভাবে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় জনসাধারণকে দ্বারাকপুর ও ভাইটকান্দি হয়ে ৫ কিলোমিটার ঘুরে মালামাল পরিবহন করতে হয়।
সুতারকান্দি গ্রামের স্বাস্থ্যকর্মী আবু তারিক বলেন, এই জায়গায় এক সময় ফেরিঘাট ছিল। তখন জনসাধারণ মালামালসহ খেয়া নৌকার মাধ্যমে পারাপার করতো। কিন্তু ব্রিজ নির্মাণের পর খেয়া নৌকা বন্ধ করে দেওয়ায় ভোগান্তি আরও বেড়ে গেছে। ছোট চিলাগাই গ্রামের কৃ ষক রবিজল জানান, সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য অনেক রাস্তা ঘুরে বাজারজাত করতে বাড়তি টাকা খরচ হয়ে যায়। সেতু দিয়ে কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় দুইপারের বাজারে কাঁচা পণ্যের মূল্যে মণপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকার ব্যবধান থাকে।
সুতারকান্দি গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, সুতারকান্দি থেকে নদীর ওপারে বাহাদুরপুরে ভাইটকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে যেতেও ৪ কিলোমিটার ঘুরতে হয়। এছাড়া নদীর উভয় পারে স্কুল-মাদরাসাসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেতুটির বিষয়ে ফুলপুর উপজেলা প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসাইনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, সংযোগ সড়কে ব্যক্তিমালিকানা জায়গা থাকায় মালিকের আপত্তির কারণে সড়কে মাটি ভরাট করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।