ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

হান্নান শাহ্ স্মরণে আজ কাপাসিয়ায় সভা

হান্নান শাহ্ স্মরণে আজ কাপাসিয়ায় সভা

বিএনপির প্রয়াত নেতা আবু সাইদ মতিউল হান্নান শাহ্র স্মরণ সভা আজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হবে। বিকালে কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সাবেক পাটমন্ত্রী বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ও গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কৃতিসন্তান প্রায়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ্র ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী গত ২৭ সেপ্টেম্বর থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হবে আজ শনিবার। এ উপলক্ষে হান্নান শাহ্ স্মৃতি সংসদ, তার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে হান্নান শাহ্র রুহের মাগফিরাত কামনায় তার গ্রামের বাড়ি ঘাগটিয়াতে কোরআন খানি, মিলাদ, দোয়া ও বিকালে কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্মরণ সভাসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছেন। হান্নান শাহ্র ছোট ছেলে গাজীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ জানায়, স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে আসছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ব্যপারে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এরইমধ্যে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে।

তার ধারণা প্রায় লক্ষাধীক লোকের সমাগম হতে পারে সমাবেশে। আবু সাইদ মতিউল হান্নান শাহ্ ১৯৪১ সালের ১১ অক্টোবর গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি ৭৪ বছর বয়সে গত ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ১১ সেপ্টেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরের র‌্যাফেলস্ হার্ট সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে তার হৃদযন্ত্রের অস্ত্রপাচার করা হয়। ২১ দিন পর ২৭ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি। হান্নান শাহ্র বাবা ফকির আব্দুল মান্নান ছিলেন পাকিস্তান আমলের মন্ত্রী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। ১৯৫৬ সালে ঢাকার সেন্টগ্রেগরি স্কুল থেকে মেট্রোকোলেশন পাস এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।

১৯৬০ সালে বিএসসি অধ্যয়ণকালে পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে সামরিক একাডেমি কাকুল থেকে কমিশন প্রাপ্ত হন। ১৯৮৩ সালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে থাকাকালীন সময়ে এরশাদ সরকার বাধ্যতামূলক তাকে অবসর প্রদান করেন। হান্নান শাহ্ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কপ্রোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৮৪ সালে বিএনপিতে যোগদান করেন।

তিনি বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করেন। পরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মনোনীত হন। ১৯৯১ সালে গাজীপুর-৪, কাপাসিয়া থেকে সংসদ সদস্য নিবার্চিত হন এবং পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে তৎকালীন বহুল আলোচিত ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে গণতন্ত্র বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সর্ব প্রথম মুখ খোলে কথা বলেছিলেন। তখন খালেদা জিয়াকে দেশ ত্যাগ ও শেখ হাসিনাকে দেশে আসতে না দেওয়ার ভূমিকার ব্যাপক সমালোচনা করেন। গণমাধ্যমে তখন সরকারের সমালোচনার কারণে বার বার হান্নান শাহ্কে জেলে যেতে হয়েছে। দলের এ ক্রান্তিকালে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোনীত করেন। হান্নান শাহ্ ছিলেন কাপাসিয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিভাবক এবং সাধারণ মানুষের আপনজন এবং কাপাসিয়ার উন্নয়নের রূপকার। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এলাকার স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়নে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। বিশেষ করে স্থানীয় শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর তার নির্মিত ‘ফকির মজনু শাহ্ সেতু স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত