ঢাকা শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বান্দরবানে রোহিঙ্গাদের অবৈধ বসবাস, চুরি-ছিনতাইসহ বাড়ছে বিভিন্ন অপরাধ

বান্দরবানে রোহিঙ্গাদের অবৈধ বসবাস, চুরি-ছিনতাইসহ বাড়ছে বিভিন্ন অপরাধ

বান্দরবান সদর উপজেলার ৪নং সুয়ালক ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় দিনদুপুরে বাড়ছে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা। সুযোগ বুঝে চোরচক্র বাসাবাড়িতে ঢুকে নিয়ে যাচ্ছে টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোন ও দামী জিনিসপত্র। চুরির ঘটনা ঠেকাতে মাঝেরপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েকশ রোহিঙ্গ সুয়ালক ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিঘ্নে বসবাস করছে। এসব রোহিঙ্গাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে কিছু স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা সহজেই বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বা অন্য জেলায়।

সুয়ালক ইউনিয়নটি বান্দরবানের প্রবেশমুখে অবস্থিত রেইসা আর্মি ক্যাম্পের আগেই হওয়ায় চেকপোস্টের আওতার বাইরে পড়েছে এই এলাকা। এতে রোহিঙ্গাদের প্রবেশ ও অবস্থানে কোনো বাধা নেই। বর্তমানে এলাকাটিতে কয়েকশ রোহিঙ্গা পরিবার নির্বিঘ্নে বসবাস করছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, গত ২২ অক্টোবর পাহাড় কণ্ঠের প্রকাশক ও দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক বাবুল খাঁনের দুটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায় চোরচক্র।এই বিষয়ে সাংবাদিক বাবুল খাঁন বলেন, গত ২২ অক্টোবর বিকাল আনুমানিক ৪টার সময় সুয়ালক বঙ্গপাড়ায় আমার খামার থেকে দুটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায় চোরচক্র। রাতে বান্দরবান সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। কিন্তু এরপর থানা থেকে কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি, পুলিশ কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তা আমি জানি না।

এলাকাবাসীর দাবি, কিছু স্থানীয় বাসিন্দার সহযোগিতায় সুয়ালক ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বঙ্গপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গারা বাসা ভাড়া নিয়ে অবাধে বসবাস করছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিবন্ধিত ব্যক্তিরা কীভাবে নির্বিঘ্নে এখানে বসবাস করছে সে প্রশ্ন ঘুরছে জনমনে। স্থানীয়দের অভিযোগ, আগে এলাকাটি ছিল শান্তিপূর্ণ। রোহিঙ্গারা আসার পর থেকেই চুরি, ছিনতাই ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েছে। ফলে ক্রমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এভাবে চলতে থাকলে এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

এ বিষয়ে সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্যনু মার্মা বলেন, স্থানীয় একটি চক্র এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে নানা অপরাধ ঘটাচ্ছে। কিছুদিন আগেও এক ব্যবসায়ীকে রাতের আঁধারে পথরোধ করে ছিনতাই করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বান্দরবান সদর থানার ওসি মাসুদ পারভেজ বলেন, চুরি-ছিনতাই ঠেকাতে স্থানীয়দের অবগত করা হয়েছে এবং নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে। এই অক্টোবর মাসে আমাদের থানায় সাতটি চুরির মামলা হয়েছে। ১৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। যে কোনো ঘটনার অভিযোগ পেলেই তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, চুরি-ছিনতাইসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে অবিলম্বে অবৈধভাবে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে ফেরত পাঠাতে হবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও নজরদারি আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত