ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পাথরঘাটায় ছাদবাগান মেটাচ্ছে সবজির চাহিদা

* করোনাকালীন ঘরবন্দি জীবনের একঘেয়েমি কাটাতেই ছাদ কৃষির যাত্রা শুরু। ছোটবেলার গাছপ্রেম তাকে আরও অনুপ্রাণিত করে। স্বামী নুর আলমও তার এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়ান
পাথরঘাটায় ছাদবাগান মেটাচ্ছে সবজির চাহিদা

বরগুনার পাথরঘাটা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ইরানি আলম ছাদ কৃষিতে সৃষ্টি করেছেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত। বস্ত্র ব্যবসায়ী নুর আলমের স্ত্রী ইরানি আলম নিজের বাড়ির ছাদকে রূপ দিয়েছেন সবুজে ঘেরা বিষমুক্ত ফল-সবজির বাগানে। বাজার থেকে কোনো সার না কিনে পুরো বাগানটিই পরিচর্যা করেন নিজের হাতে তৈরি করা কম্পোস্ট সার দিয়ে। ইরানি আলম জানান, করোনাকালীন ঘরবন্দি জীবনের একঘেয়েমি কাটাতেই ছাদ কৃষির যাত্রা শুরু। ছোটবেলার গাছপ্রেম তাকে আরও অনুপ্রাণিত করে। স্বামী নুর আলমও তার এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়ান। প্রতি শুক্রবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রেখে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে ছাদ বাগানে কাজ করেন। এতে ইরানি আরও উৎসাহ পান।

কম্পোস্ট সার তৈরিতে তিনি ব্যবহার করেন রান্নাঘরের বাড়তি ফেলে দেওয়া অংশ, মাছ ধোয়া পানি, ডিমের খোসা ও ব্যবহৃত চা পাতা। এসব দিয়েই পরিচর্যা করেন তার শতাধিক গাছের সমৃদ্ধ বাগান। ইরানি আলমের ছাদ বাগানে রয়েছে নানান ধরনের সবজির পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের ফুলের চারা। প্রতিদিনই এসব চারা ও গাছ কিনতে আসছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ নানা পেশার মানুষ।

ইরানি আলম বলেন, শুরুর দিকে অনেকেই হাসাহাসি করত। এখন তারাই এসে পরামর্শ চান। পরামর্শ দিতে পেরে আমি খুব আনন্দ পাই। আমার দেখাদেখি পাথরঘাটা পৌর শহরের অনেক গৃহিণী তাদের বিল্ডিং এর ছাদেই এখন ছাদ বাগান শুরু করেছেন। নারীরা চাইলে ঘরে বসেই এমন কাজে মন দিয়ে করে করতে পারেন বাড়তি আয় এতে কারও সহায়তার প্রয়োজন হয় না।

ইরানির স্বামী নুর আলম বলেন, আমার স্ত্রী যখন ছাদ বাগান করার ইচ্ছার কথা জানাল, আমি বাধা দেইনি। এখন আমাদের বাড়িতে অনেকেই আসেন। তিনি আরও বলেন, এখন শুধু পাথরঘাটা থেকেই নয়, দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ অনলাইনে ফুল ও বিভিন্ন প্রজাতির ফল এর চারা অর্ডার করে। অনেক সময় কুরিয়ারের মাধ্যমেও চারা পাঠাতে হয়। ইরানির এই উদ্যোগ এখন শুধু পরিবারের আয় বাড়াচ্ছে না, আমাদের এলাকার নামও ছড়িয়ে দিচ্ছে দূর-দূরান্তে। এসব দেখে খুব ভালো লাগে। সময় পেলেই আমিও তাকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করি। ইরানি আলমের পুত্রবধূ হালিমা সাজনা জানান, এ বাড়িতে আসার পর দেখি শাশুড়ি ছাদ বাগান নিয়ে খুব যত্নবান। আমিও তাকে সাহায্য করি যাতে বাগান আরও ভালো ও সতেজ থাকে। সবচেয়ে ভালো লাগে আমরা যে সবজি খাই তা পুরোপুরি বিষমুক্ত এবং আমাদের ছাদেই উৎপাদিত। ছাদ কৃষির মাধ্যমে আত্মনির্ভরতার এই গল্প এখন পাথরঘাটায় অনুপ্রেরণার নতুন উৎস। স্থানীয়রা বলছেন, ইরানি আলমের উদ্যোগ ছাদ কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত