
জাতিসংঘের (ইউএন) শান্তিরক্ষা মিশনে থাকা অবস্থায় সুদানের আবেই এলাকায় একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও আটজন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (৩০) বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ খবরে নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহত সেনা সদস্য জাহাঙ্গীর আলম পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি মধ্যপাড়া গ্রামের মো. হজরত আলীর দ্বিতীয় ছেলে। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মেস ওয়েটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ৭ নভেম্বর তিনি শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে সুদানে যান।
নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুপম দাস। তিনি বলেন, গত শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক খুদে বার্তায় হতাহতের তথ্য জানায়। খোঁজ নিয়ে গতকাল রোববার স্বজনদের বিষয়টি জানানো হয়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিন ভাইয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীর ছিলেন মেঝ। বড় ভাই মো. মোস্তফা প্রবাসী এবং ছোট ভাই মো. শাহিন মিয়া কৃষিকাজ করেন। প্রায় ১১ বছর ধরে তিনি সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী ও তিন বছর বয়সী একমাত্র ছেলে ইরফানকে রেখে দায়িত্ব আর স্বপ্ন নিয়ে তিনি সুদানে গিয়েছিলেন।
নিহতের বাবা মো. হযরত আলী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, যাওয়ার সময় বলেছিল আমাদের দেখাশোনা করতে। আমি অসুস্থ, দেশে ফিরে আমাকে সাহায্য করবে। যাওয়ার সময় কিছু টাকা দিয়ে গিয়েছিল। এখন আমার ছেলে আর নেই। নিহতের মা পালিমা বেগম ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে বলেন, আমার বাবাকে এনে দেন। সে ছিল আমার ঘরের আলো। স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার স্বামীর মৃত্যুর খবরে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। স্বজনরা তাকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।