মুসলমানদের জীবনে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে দুটো উৎসব। একটি হলো ঈদুল ফিতর এবং অপরটি হলো ঈদুল আজহা। ঈদ মানে উৎসব, আনন্দ বা খুশি। ইসলাম ধর্মের নির্দেশ অনুযায়ী মুসলমানরা প্রতিবছর এই দুটো উৎসব পালন করে থাকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের উদ্দেশ্যে নিজেকে সোপর্দ করার মাধ্যমে খুশিতে পরিপূর্ণ হয় ধনী, গরিব, শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা সব মুসলমানের অন্তর। সাম্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হওয়া এবং ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হওয়ার শিক্ষা আমরা পেয়ে থাকি ঈদ উৎসব থেকে। মর্যাদা ও তাৎপর্যের দিক থেকে দুটি ঈদই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী।
আরবি ‘আজহা’ শব্দের অর্থ ত্যাগ স্বীকার বা কোরবানি। পশু কোরবানি করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ অর্জনের প্রচেষ্টা মানব ইতিহাসের সূচনালগ্ন থেকেই চলে আসছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের আদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রায় চার হাজার বছর আগে মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.) স্বীয় শিশুপুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে কোরবানি করার জন্য উদ্ধত হন। দয়াময় আল্লাহ তাঁর ত্যাগে খুশি হয়ে ইসমাঈল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি কবুল করলেন। ঠিক তখন থেকেই মুসলমানরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের জন্য প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আজহার দিনে প্রিয় পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন।
ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত পবিত্র ঈদুল আজহা মানুষকে ধর্মীয় মূল্যবোধে জাগ্রত হয়ে জগতের সব সৃষ্টির কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করার শিক্ষা দেয়। ঈদের মধ্যে আছে সাম্যের বাণী। তাই তো ত্যাগের পাশাপাশি আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার শিক্ষাও আমরা পেয়ে থাকি এই কোরবানি থেকে। সমাজে গরিব, দুঃখী মানুষও যাতে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয় সেজন্য ইসলামে রয়েছে নির্দেশনা। ধনী, গরিবের ব্যবধান ভুলে গিয়ে সবাই এক হয়ে যাওয়ার এ ব্যবস্থা জগতে সত্যিই বিরল।