ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ফের চামড়ার বাজারে ধস

সংকট নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি

সংকট নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি

ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর চামড়া ঘিরে প্রতিবছরের মতো এবারও ব্যাপক সংকটময় চিত্র দেখা গেল। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, অন্যদিকে চামড়ার যথাযথ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণের অভাবে চামড়া নষ্ট এবং অপচয়ের হতাশাজনক ঘটনারই পুনারাবৃত্তি দেখা গেল। কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে কারণগুলো হলো কাঁচা চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণে সুসংগঠিত বাজারের অভাব। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহিন আহমেদ যেমনটা বলেছেন, ঈদুল আজহার সময় হঠাৎ বিপুল পরিমাণ চামড়া বাজারে এলেও তা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করার মতো পর্যাপ্ত অবকাঠামো দেশে নেই। ফলস্বরূপ, ১৫ থেকে ২০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, সাভারের ট্যানারিপল্লীর অকার্যকারিতা। অনেক ট্যানারি এখনও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারেনি, যা আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা হারাচ্ছে। ভারতের মতো দেশগুলো কম খরচে এবং উন্নত প্রযুক্তিতে চামড়া সরবরাহ করে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাচ্ছে। তৃতীয়ত, সরকার নির্ধারিত মূল্যের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন। বাংলাদেশ কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির মহাসচিব টিপু সুলতান বলেছেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম বর্তমান বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। তিনি অভিযোগ করেন, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এটি নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ন্যায্যমূল্য পাননি। বিশেষ করে ছাগলের চামড়ার দাম এতটাই কমেছে যে, কেউ কেউ সেগুলো পুঁতে ফেলেছেন বা আবর্জনার স্তূপে ফেলে দিয়েছেন। চতুর্থত, আর্থিক সংকট এবং বকেয়া টাকা পরিশোধে ব্যর্থতা। ট্যানারি মালিকদের কাছে আড়তদারদের এখনও প্রায় ১১০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে, যা তারল্য সংকট তৈরি করেছে। প্রতিবছরই কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে এই সংকট নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। বাজারব্যবস্থা সুসংগঠিত করার পাশাপাশি কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য আধুনিক অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। চামড়াশিল্প বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় একটি খাত। চামড়া নষ্ট হওয়া কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতিই নয়, বরং জাতীয় সম্পদেরও অপচয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত