ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে

মশা নিধনের কোনো বিকল্প নেই

মশা নিধনের কোনো বিকল্প নেই

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা রোধে মশা নিধনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু জুনের মাঝামাঝি এলেও মশা নিধনে তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না দুই সিটি কর্পোরেশনের। জনপ্রতিনিধি না থাকায় দুই সিটি কর্পোরেশনের মশা নিধন কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে মৌসুমের শুরুতে এবার ঢাকার বাইরের জেলা বরগুনাকে ডেঙ্গুর হট স্পট ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এবার ঢাকার বাইরেও কোনো কোনো জেলায় ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়তে পারে। ডেঙ্গুর পিক সিজন কখনও আগস্টে, কখনও সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে হয়ে আসছে। এই তিন মাসের কোনো না কোনো মাসে দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বৃদ্ধি পায়। এটি নির্ভর করে মশার বংশবিস্তারে সহায়ক আবহাওয়া অর্থাৎ বৃষ্টিপাতের ওপর। তবে বছরের কোন মাসে ভয়াবহতা বাড়তে পারে সে বিষয়ে বলা কঠিন। সেজন্য এখন থেকেই জনসচেতনতা বাড়াতে প্রস্তুতি নিতে হবে। এ বছর জুনের মাঝামাঝি আসতেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২১ সালের জুলাইয়ে ডেঙ্গু রোগী বাড়া শুরু করে, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে বেড়ে অক্টোবরে কমতে শুরু করে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাড়তে শুরু করে, অক্টোবর ছিল পিক সিজন, নভেম্বরে কমতে শুরু করে। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে বাড়তে শুরু করে, আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বেড়ে অক্টোবরে গিয়ে কমতে শুরু করে। ২০২৪ সালের আগস্টে বাড়তে শুরু করে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর পর্যন্ত বেড়ে নভেম্বরে কমতে শুরু করে। সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, তিন বছরের মধ্যে এ বছরের জুনে রোগীর সংখ্যা বেশি। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি রোগী বাড়ছে। এ বছর ঢাকা মহানগরে ডেঙ্গু রোগী কম। ঢাকার বাইরে এর প্রকোপ কিছুটা বেশি। অন্য বছরগুলোতে দেখা গেছে, ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রথমে ঢাকা শহরে বা দেশের বড় শহরগুলোতে দেখা যায়। এরপর ধীরে ধীরে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এ বছর দেখা যাচ্ছে দেশের দক্ষিণের জেলা বরগুনায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬০৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৫০ জন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এবার ভয়াবহভাবে ডেঙ্গু বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পিক সিজন আগস্ট-সেপ্টেম্বরে হতে পারে। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা রোধে উদ্যোগ নিতে হবে। বড় পরিসরে সবাইকে সম্পৃক্ত করে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়ে মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করে দিতে হবে। শহরের জলাবদ্ধতা বা বৃষ্টির পানি জমে থাকার ফলে এডিস মশার বংশবিস্তার বেশি হচ্ছে। মশার উৎপাদন স্থান চিহ্নিত করে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রতিটি বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দিতে হবে। মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে। আষাঢ় মাস শুরু হলো। এ সময়টা বর্ষা মৌসুম। চারিদিকে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে এডিস মশার বংশবিস্তার বাড়বে। তাই ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশাকে নির্মূলে সর্বোপরি জনসচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। আশা করছি, সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত