সংবিধান হলো- রাষ্ট্রের মৌলিক আইন বা দলিল, যা রাষ্ট্রের গঠন, সরকার পরিচালনার নিয়মাবলী এবং নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য নির্ধারণ করে। সংবিধান হলো- একটি দেশের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি। সরকার এবং রাষ্ট্রকাঠামো পরিচালিত হয় সংবিধান দ্বারা। সংবিধানে সুষ্ঠু সঠিক আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের মাধ্যমে একটি দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়। আবার সঠিক যথার্থ ও উপযুক্ত আইনের প্রয়োগ এবং বাস্তবায়ন করা না হলে একটি রাষ্ট্রের শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। দেশের মধ্য চুরি-ডাকাতি, মারামারি-হানাহানি, নির্যাতন, নিপীড়ন, খুন-ধর্ষণ ও বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধিপায়। রাষ্ট্রে বসবাসরত জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করা তখন কঠিন হয়ে পড়ে। সঠিক ও সুষ্ঠু আইন প্রণয়নের উপর নির্ভর করে একটি রাষ্ট্রের শান্তিশৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন। দেশকে সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য যথার্থ ও উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করতে হবে।
বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন বলেছেন, ‘যেখানে ন্যায়বিচার নেই, সেখানে শান্তি থাকতে পারে না।’ আমাদের দেশের শাসন কার্য পরিচালনায় নিয়োজিত সদস্যরা কর্তৃক আইন তৈরি ও প্রণয়ন করা হয়। বাংলাদেশের সরকার ও রাষ্ট্র পরিচালিত হয় বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে গৃহীত ডক্টর কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ৩৪ জন সদস্যের সমন্বয়ে প্রস্তাবিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের আইন ও সংবিধান প্রনীত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৭২ সালের সংবিধানকে (১৭ বার) বারবার সংশোধন ও পরিমার্জন করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করে আসছে। এ সংবিধানের অধীনে কয়েকটা রাজনৈতিক দল ও সামরিক প্রধান কর্তৃক এ দেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হলে ও জনগণ তার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এ দেশে প্রতিনিয়ত সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা, মারামারি-হানাহানি, খুন-ধর্ষণ কমার পরিবর্তে আরও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার নির্বাচন আসলে নানা প্রতিশ্রুতি ওয়াদা দিলে ও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বাংলাদেশ সংবিধান ও গণতন্ত্র অনুযায়ী সবার জন্য আইন সমানের কথা বলা হলে ও বাস্তবে ধনী-গরিব অবস্থাভেদে আইন ভিন্ন রকম ও আলাদা আলাদা।
যারা রাষ্ট্রের আইনপ্রণেতা এবং যাদের দারা আইন প্রয়োগ করা হয়েছে- সর্বপ্রথম তারাই আইন ভাঙ্গার নজির সৃষ্টি করেছে। আইন কাগজে কলমে থাকলে ও প্রভাবশালীরা অনেক সময় আইনের তুয়াক্কা করে না। আইনকে তারা বৃদ্ধাংগুলো দেখিয়ে দেশের প্রচলিত আইনের বিপরীতে গিয়ে নানা রকম অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছে। এদেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিত প্রভাবশালী এমপি-মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও সরকারি আমলারা অনেক সময় আইনকে ব্যবহার করে নিজের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করেছে। ১৯৭২ সালের সংবিধানে গঠিত আইনে মৌলিক অধিকারের চেয়ে রাজনৈতিক ভাবাদর্শ প্রাধান্য পেয়েছে।
যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাদের সুবিধা মতো সেই আইনকে পরিবর্তন, পরিমার্জন ও সংশোধন করেছে। উক্ত সংবিধানে সরকার গঠন ও জনগণ পরিচালনার রূপরেখার কথা বলা হলে ও সামাজিক ন্যায়বিচার ও ইসলামী জীবন বিধান অনুযায়ী সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার কথা বলা হয়নি। ৯০ শতাংশ মুসলিম প্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও বিদেশি চাপে এ দেশের সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছে শরীয়া আইনের বিপরীতে অমুসলিম প্রধান দেশগুলোকে অনুসরণ করে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের শাসন শোষণ থেকে মুক্ত হলে ও তাদের রেখে যাওয়া আইন ও শিক্ষাব্যবস্থা থেকে এখনও মুক্ত হতে পারেনি। যার ফলে এই সংবিধান জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। ন্যায় বিচারের অভাবে এ দেশে নানা রখম অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, সে সরকার ক্ষমতাকে বাপ-দাদার উত্তরাধিকার সম্পত্তি মনে করে আইনের অপব্যবহার ও লুটপাট করেছে।
বাংলাদেশ সংবিধানের দ্বিতীয়ভাগে বর্ণিত রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতিগুলো আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য নয়, বিধায় সলিমুল্লাহ খানসহ অনেকে এগুলোকে শূন্যগর্ভ প্রতিশ্রুতি বলেছেন। সংবিধানের তৃতীয়ভাগে বর্ণিত মৌলিক অধিকারগুলো নানাবিধ শর্তযুক্ত হওয়ায়, এগুলোর ফাঁকফোকর গলে নাগরিকের মৌলিক অধিকারগুলো সরকার কর্তৃক অহরহ লঙ্ঘন হয়েছে। অধিকারবিষয়ক বিধানগুলোর ফাঁকফোকর গলে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি এবং ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির মতো দমনমূলক ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আইনগুলোর নিবর্তনমূলক ধারাগুলো বহাল থেকে গেছে।
সংবিধানের চতুর্থ ভাগে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় নির্বাহী ক্ষমতা ন্যস্ত করেছে; কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের কোনো বিধান সংবিধানে না থাকায় ৭০নং অনুচ্ছেদ দ্বারা সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা খর্ব করার কারণে প্রধানমন্ত্রীর হাতে নির্বাহী ক্ষমতা নিরঙ্কুশভাবে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থাকে নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্র বলে অনেকে মতামত প্রদান করেছে। ১০ এপ্রিল ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনীসহ বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধিত হয়েছে, যেগুলোর অনেকগুলোর উদ্দেশ্যই ছিল শুধু সরকারের ক্ষমতা বাড়ানো। পঞ্চদশ সংশোধনীতে ৭খ অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানের প্রথম ভাগ, দ্বিতীয় ভাগসহ আরও কিছু অনুচ্ছেদকে সংশোধন-অযোগ্য বা চিরকালীন বলে ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ সংবিধানে বর্ণিত অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা প্রবৃত্তি ৫টি মৌলিক অধিকারের কথা বলা হলে ও বাস্তবে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলে ও তা কোনো সরকারই বাস্তবায়ন করেনি। শুধুমাত্র ক্ষমতার পালা বদল হয়েছে। বিদেশি অমুসলিম রাষ্ট্রকে নকল করা আইন দিয়ে শান্তিশৃঙ্খলা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এই আইনে উকিল, মুন্সি, থানা-পুলিশ, কোর্ট-ক্যাচারিতে কর্মরত অফিসাররা লাভবান হয়েছে। সাধারণ জনগণ প্রতিনিয়ত ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সাধারণ মানুষ ন্যায় বিচারের আশায় থানা-আদালতে ঘুরতে ঘুরতে হয়রান। ঘুস-ব্যতীত নিরহ মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা ও ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। যারা ন্যায়বিচারের ব্যবস্থা করবে তারা টাকার কাছে, প্রভাবশালীদের হাতে বন্দি। বাংলাদেশের সব রকম আদালতে প্রায় ৪৪ লাখ মামলার জট সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের এই পাহাড়সম মামলাজট নিরসনে একটি মহাপরিকল্পনা ও নেওয়া হচ্ছে না। আইনজীবী ও বিচারকরাসহ সাত মামলা খালাসের উদ্যোগ নিচ্ছে না। অধিকন্তু আইনজীবীরা তাদের মামলা বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার আশক্সক্ষায় সরকারের কাছে তদবির করেছে, যাতে করে সাত মামলা নিষ্পত্তি ব্যবস্থা না করা হয়। ঘুস না দিলে গরিব জনগণ ন্যায্য বিচার পাচ্ছে না। নীরহ জনসাধারণের দাবি থানার এরকম বিচারহীনতার পরিবেশ আমরা কোনো দিন আশা করিনি।
পানির মতো স্বচ্ছ পরিষ্কার খুনের মামলার আসামি প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঘুনের বিনিময়ে আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না। আসামি ওল্টো বাদীকে হুমকি দিচ্ছে। অন্যদিকে বাদীকে মামলা পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মামলা পরিচালনার টাকা ও ঘুসের টাকা জোগান দিতে ভিটেবাড়ি, সহায়-সম্ভল বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। ঘুস ব্যতীত নীরহ গরিব মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না। যার ফলে প্রতিনিয়ত মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, হয়রানির স্বীকার হচ্ছে। অন্যদিকে ঘুসের টাকা সংগ্রহ করতে না পেরে অনেক মামলার বাদীরা মামলা পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছে। অভিযোগ আছে যে, যত বেশি ঘুস দিচ্ছে বিচার সেদিকে মূঢ় নিচ্ছে। মিডিয়া ও সংবাদপত্রের পাতা খুললেই মারাত্মক খুন ধর্ষণ, চুরি-ডাকাতি খবর।
সংবিধান ও নানান রখম আইন থাকলে ও বন্ধ করা যাচ্ছে না অপরাধ। প্রযক্তিগত উন্নয়নের তালে তালে অপরাধের ধরন ও পাল্টে গেছে। সব কিছুর একটা শেষ আছে; কিন্তু বাংলাদেশের মামলার শেষ নেই। বছরের পর বছর মামলা পড়ে থাকে। সাগর-রুনি হত্যার মামলা ১১৩ বার পিছিয়েছে। এটা একটা স্পর্শকাতর বিষয় হওয়া সত্ত্বেও সুষ্ঠু তদন্ত ও উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে এই মামলাটা কোর্টে বিচারাধীন আছে।
শুধুমাত্র পারিবারিক আদালতে ঝুলে আছে নব্বই হাজারের অধিক মামলা। সারা দেশে বিচারাধীন এই মামলা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে পারিবারিক আদালত। পর্যাপ্ত বিচারক ও জনবলের অভাবে অর্থঋণ আদালতের মামলা সঠিক সময়ে পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছে। এতে করে খেলাপি ঋণ আদায়ে সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা বিচারে বেগ পেতে হচ্ছে। অন্যান্য মামলার অবস্থা আরও খারাপ। মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতে কয়েক লাখ মামলা বিচারাধীন অবস্থায় ঝুলে আছে। বিচারিক দীর্ঘসূত্রতার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিচারপ্রার্থীদের। উচ্চ আদালতে মামলা নিষ্পত্তির পাশাপাশি মামলার সংখ্যাও বাড়ছে। মামলা দায়েরের চেয়ে নিষ্পত্তির হার অনেকাংশে কম। ফলে প্রতিদিন নতুন করে মামলাজটে যুক্ত হচ্ছে সিংহভাগ মামলা। বর্তমানে উচ্চ আদালতসহ সব রকম বিচারিক আদালতে মামলার সংখ্যা প্রায় ৪৪ লাখ।
এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, বিচারকের স্বল্পতা, মামলার দীর্ঘসূত্রতা, বারবার সময় প্রার্থনা, প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এ প্রবণতাকে বাড়িয়ে তুলছে। কিছু কিছু আইনজীবীর ভূমিকার কারণে দেশের উচ্চ ও নিম্ন আদালতে প্রতিদিন মামলার সংখ্যা বাড়ছে। মানুষ মরে যায়, অথচ দেওয়ানি মামলা চলে কয়েক পুরুষ ধরে। এ ব্যবস্থা থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতেই বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি আইন। বিচারপ্রার্থীরা বিচারের আশায় লাখ লাখ টাকা খরচ করে; কিন্তু তার পরও কাঙ্ক্ষিত বিচার তারা পায় না। দিনের পর দিন সময় প্রার্থনার নামে সুপরিকল্পিতভাব ন্যায়বিচারকে বাধাগ্রস্ত করা হয়। কোনো কোনো মামলার বিচার নিষ্পত্তিতে বিচারপ্রার্থীকে এক যুগ, দুই যুগ, এমনকি তিন যুগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিচার বিলম্বের কারণে একদিকে মামলা পরিচালনার ব্যয় বাড়ছে, অন্যদিকে বাড়ছে ভোগান্তি। কিছু কিছু মামলার বাদী বিচার শেষ হওয়ার আগেই মারা যাচ্ছেন।
আবার বিচার হলেও দীর্ঘসূত্রতার কারণে মামলার অনেক তথ্যপ্রমাণ হারিয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো মামলার সাক্ষী মারা গেছেন। কিছু মামলার সাক্ষীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কারণে বিচার শেষে সাজার হার কমে যাচ্ছে। যার ফলে হাজার হাজার লাখ লাখ মামলা জটের সৃষ্টি হয়েছে।
১৯৭১ সালের হাজার হাজার মুক্তিযুদ্ধাদের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার মাধ্যমে জনগণ আশা করেছিল স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার পাবে, ন্যায় বিচার পাবে, অপরাধীরা কঠোর শাস্তি ভোগ করবে। রাজনৈতিক দল বা অন্যকারো স্বার্থে ব্যবহৃত হবে না, দেশের প্রশাসন ও বিচার বিভাগ। দুর্নীতি, ঘুষ, কালোবাজারি, টাকা পাচার বন্ধ হবে। দুর্নীতিবাজরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ভোগ করবে। অধিকার আদায়ে আর কোনো প্রাণ দিতে হবে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলে ও সরকার যথাযতভাবে আইন, স্বাধীনতা, সাম্য, মৌলিক অধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে। যুগের পর যুগ ব্যর্থতাকে কার্যকর, সঠিক ও নৈতিক রাষ্ট্র বলে চালিয়ে দিয়েছে।
লেখক, সংস্কারক, প্রাবন্ধিক